নিজস্ব প্রতিনিধি,বলরামপুর :
বলরামপুর ব্লকের বাঘাডি গ্রামে রাজ্য সড়ক নির্মাণের পর থেকে শুরু হয়েছে চরম দুর্ভোগ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পিডব্লিউডি অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণের ফলে তাদের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
স্থানীয়দের দাবি, নির্মাণের সময় ইঞ্জিনিয়াররা সরেজমিনে না গিয়ে ঠান্ডা ঘরে বসে পরিকল্পনা করেছেন। যদিও ইঞ্জিনিয়ারদের তরফে বলা হয়েছিল, বাঘাডি এলাকায় রাস্তায় জল জমে থাকে, তাই রাস্তার উচ্চতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রাস্তার দুই পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা আরও বেড়েছে।
গত কয়েকদিনের লাগাতার নিম্নচাপ ও ভারী বর্ষণে সমস্যার চূড়ান্ত রূপ দেখা দিয়েছে। উঁচু রাস্তার পাশে থাকা বহু বাড়িতে রাস্তার জল ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা নাগাদ বাঘাডি গ্রামে দেখা যায়, প্রায় ৩০টি পরিবারের বাড়িতে হাঁটুজল জমে রয়েছে। রান্না করা, ঘুমানো তো দূরের কথা—পানীয় জল ও নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।

সবচেয়ে শোচনীয় পরিস্থিতি বৃদ্ধ সন্ধ্যা কুমারীর। বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। চোখের জলে ভেসে তিনি জানান, এখন কোথায় যাবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। এমন বিপর্যস্ত অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন আরও বহু পরিবার।
বাড়ির দেয়ালে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। যে কোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়ে গেছে। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই বাড়িতেই থাকতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষজন।
অভিযোগ, রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই নবনির্মিত ঢালাই রাস্তায় একাধিক ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে নির্মাণের গুণমান নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
স্থানীয় তেঁতলো গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বলরামপুর ব্লক অফিস থেকে সাহায্যের কোনো হাত এখনো বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের। অথচ এই দুর্যোগগ্রস্ত এলাকা প্রশাসনিক দফতর থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে।
প্রশ্ন উঠছে, যেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জনসাধারণের সমস্যা সমাধানে সর্বদা উদ্যোগী, সেখানে স্থানীয় প্রশাসনের এহেন উদাসীনতা কেন? নিকাশি নালা নির্মাণে কেন এই অনীহা? নাকি পিডব্লিউডি-র ভুল পরিকল্পনার দায় এড়াতেই সকলে চুপ?
সমস্যার দ্রুত সমাধানে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সকলে।
Post Comment