সুইটি চন্দ্র, পুরুলিয়া:
চলতি বছরে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত বর্ষার মারাত্মক ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছিল পুরুলিয়া জেলা। ১৫ জুন পর্যন্ত যেখানে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হওয়া প্রয়োজন ছিল। সেখানে বৃষ্টিপাত মাত্র ৪১.৫৪ মিলিমিটারেই সীমাবদ্ধ ছিল। অথচ সারা জুন মাসে গড় বৃষ্টির পরিমাণ সাধারণত ২০২.৩২ মিলিমিটার। ফলে কৃষকদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল গভীর উদ্বেগ।
তবে জুনের দ্বিতীয়
সপ্তাহের পর নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টিতে সেই ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হয়েছে। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ পৌঁছেছে ৪০৩.১৪ মিলিমিটারে, যা ৯৯.২৬ শতাংশ বৃদ্ধি। এই পরিমাণ বৃষ্টিপাত কৃষির পক্ষে অত্যন্ত সহায়ক বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকেরা।
পুরুলিয়া জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) আদিত্য দুয়ারি জানান, জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও নিম্নচাপজনিত টানা বর্ষণে সেই ঘাটতি অনেকটাই মিটে গেছে। ফলে আমন ধানের চাষের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাহলে কি এবার রেকর্ড ফলন হবে? আশাবাদী হলেও এখনই নিশ্চিতভাবে কিছু বলছে না কৃষি দপ্তর।

জেলার কৃষকরাও জানিয়েছেন, বৃষ্টির পর রোদের দেখা মেলায় জমিতে জমে থাকা জল দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বীজতলার কাজ এখন জোরকদমে চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী চাষিরা।
এই বছর পুরুলিয়ায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লক্ষ ৪৮ হাজার হেক্টর। কিন্তু অপ্রতুল বৃষ্টির কারণে মাত্র ৩ লক্ষ ২৮ হাজার হেক্টরে চাষ করা সম্ভব হয়েছিল। ২০২৩ সালে আরও খারাপ অবস্থা দেখা গিয়েছিল। মাত্র ২ লক্ষ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল।
তবে এবছর পরিস্থিতি অনেকটাই অনুকূলে বলে মনে করছেন কৃষি দপ্তর এবং কৃষক উভয়েই। নিয়মিত বৃষ্টি এবং অনুকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে চলতি মরশুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আশাবাদী প্রশাসন।
Post Comment