insta logo
Loading ...
×

বাবা চায়ের দোকান চালিয়ে বড় করেছেন” — ইডি-র জেরায় ‘কোটিপতি জামাই’-এর শ্যালক

বাবা চায়ের দোকান চালিয়ে বড় করেছেন” — ইডি-র জেরায় ‘কোটিপতি জামাই’-এর শ্যালক

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

পুরুলিয়ার কাপড়গলিতে ছোট্ট চায়ের দোকান। সেই দোকানের আয়ে বড় হয়েছেন ছেলে-মেয়েরা। সোমবার সেই পরিবারেরই এক যুবকের বাড়িতে হানা দিল ইডি। সকাল সাড়ে সাতটায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘিরে ফেলে হুচুকপাড়ার সাদা দোতলা বাড়ি। ভিতরে থাকেন ২৫-২৬ বছরের শুভম মঙ্গল। আর তিনি হলেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত ‘মিডলম্যান’ কোটিপতি প্রসন্ন রায়ের শ্যালক।

সোমবার সকাল সাতটা কুড়ি মিনিট। হুচুকপাড়ার সাদা দোতলা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল ইডি-র পাঁচটি গাড়ি। নামলেন আধিকারিকরা। চারদিক ঘিরে ফেলল সশস্ত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুরু হল তল্লাশি। টানা ছ’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলল সেই অভিযান। দুপুর পৌনে দু’টোর সময় বেরিয়ে এলেন তদন্তকারীরা। বাজেয়াপ্ত হল একগুচ্ছ নথি। তবে মুখ খোলেননি কেউ। সূত্রের খবর শুভম ইডি-কে জানিয়েছেন, তার বাবা চা বিক্রি করে মানুষ করেছেন। দিদিরা কী করেছে তিনি জানেন না। প্রসঙ্গত, শুভমের প্রয়াত বাবা সুরজ মঙ্গল পুরুলিয়া শহরের কাপড়গলির চায়ের দোকান থেকেই সংসার চালাতেন।

কে এই শুভম মঙ্গল? বয়স পঁচিশ-ছাব্বিশ। অবিবাহিত। বাড়িতে টিউশন পড়ান। প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরি পেয়েও যোগ দেননি। পাশাপাশি একটি কোম্পানির পরিবেশক হিসেবেও কাজ করেন। প্রায় ছ’ বছর আগে বাবার অসুস্থতার পর এই বাড়িতে থাকতে শুরু করেন তিনি। এর আগে পুরুলিয়া শহরের নডিহা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। এখন মায়ের সঙ্গে হুচুকপাড়ার ওই বাড়িতেই থাকেন। সঙ্গে থাকেন ছোট বোন অনিমা। তাঁর স্বামী শহরের একটি হোটেলের এক্সিকিউটিভ কর্মী। শুভমদের তিন দিদি। মেজ দিদি নীলিমা রায়ের স্বামীই হলেন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত প্রসন্ন রায়। প্রসন্নর কাছ থেকে ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত হয়েছে ২৭ কোটির সম্পত্তি—চা বাগান, বাংলো, কারখানা, বিলাসবহুল গাড়ি। অভিযোগ, কয়েকশো কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই সূত্রে ইডি-র হানা শুভমের বাড়িতে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, শুভমের তিন দিদিরই প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি হয়েছিল। যদিও নীলিমা পরে চাকরি ছাড়েন। কিছু বছর আগে এই হুচুকপাড়ার বাড়িতেই আসতেন প্রসন্ন রায়। এমনকি সম্প্রতি স্ত্রী নীলিমাও এসেছিলেন বলে দাবি এলাকার মানুষের। তবে প্রসন্ন গ্রেফতার হলেও এতদিন শুভমকে ঘিরে তেমন হইচই হয়নি। সোমবারের ঘটনায় তাই চমকে গিয়েছেন পড়শিরা।

এক পড়শি লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল বলেন, “ভোরে হঠাৎ এত কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখে আঁতকে উঠেছিলাম। পরে বুঝলাম ইডি হানা দিয়েছে।”

আরেক পড়শি সুজয় ঘোষাল বলেন, “এদিন দুটো নাগাদ ইডি আধিকারিকরা বেরিয়ে যান। কাউকে গ্রেফতার করেননি তাঁরা। “

Post Comment