insta logo
Loading ...
×

বাঘের পায়ের ছাপে আরও বাঘ আসবে? প্রস্তুতিতে বন দফতর

বাঘের পায়ের ছাপে আরও বাঘ আসবে? প্রস্তুতিতে বন দফতর

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া:

পুরুলিয়ার অরণ্যপথে এবার নজরদারির নতুন অধ্যায়। ঝাড়খণ্ডের সীমানা ছুঁয়ে ঝালদা-বাঘমুন্ডির বনে বসানো হয়েছে প্রায় ২০টি ট্র্যাপ ক্যামেরা। লক্ষ্য একটাই—রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের আগমন-পথকে রক্ষা করা, সেইসঙ্গে বনের ভারসাম্য রক্ষা করে করিডরকে আরও সমৃদ্ধ করা। কারণ ঘরে ফিরেছে দুই বাঘ—জিনাত এবং জিনাতের আশিক।

একজন ওড়িশার সিমলিপাল থেকে ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে বাংলার বান্দোয়ান-বেলপাহাড়ি হয়ে ফিরে গিয়েছে সিমলিপালে। অন্যজন পালামৌর বাঘ, চান্ডিল হয়ে পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল ছুঁয়ে রাঁচির সিল্লি পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়েছে। কিন্তু আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, আবারও যদি তারা ফিরে আসে? তাই দুই রাজ্যের বনবিভাগ যৌথভাবে তৈরি করছে সংরক্ষণের রূপরেখা।

অরণ্য ভবনের দাবি, বাংলার বুক চিরে তৈরি হয়েছে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের দুটি করিডর। এক, ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে চান্ডিল হয়ে বান্দোয়ান- বেলপাহাড়ি ঘুরে দলমা ফেরা (প্রায় ২৫০ কিমি)। দুই, পালামৌ-হাজারিবাগ-রাঁচি থেকে পুরুলিয়ার ঝালদা, অযোধ্যা পাহাড় ছুঁয়ে কোটশিলা পর্যন্ত বিস্তৃত করিডর (প্রায় ৩০০ কিমি)। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই করিডর সংরক্ষণ করতে হবে বাঘের খাদ্য শৃঙ্খল অক্ষুণ্ণ রেখে। তাই বাড়ানো হচ্ছে চিতল, কাঁকর হরিণ, বন্য শূকরের সংখ্যা। তৈরি হচ্ছে ঔষধি গাছের বাগানও।

ডিএফও অঞ্জন গুহ বললেন, ‘‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের এই দুই নতুন করিডর আমাদের জঙ্গলমহলের গর্ব। তাই এদের টিকিয়ে রাখতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’’

অন্যদিকে, পালামৌ ব্যাঘ্র প্রকল্পের বক্তব্য, জিনাতের আশিকের পায়ের ছাপে খুলে গিয়েছে তিন দশক আগের প্রায় ৭০০ কিমি দীর্ঘ ব্যাঘ্র করিডর। মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় থেকে বাংলার জঙ্গলমহল পর্যন্ত টানা সেই করিডরে আবার বাঘের চলাচল শুরু হওয়ায় আশাবাদী ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞরা। পালামৌ টাইগার রিজার্ভের সহ-অধিকর্তা প্রজেশকান্ত জেনা জানিয়েছেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের করিডর অংশে নজরদারি আরও কড়া করা হয়েছে। ক্যামেরায় চলছে নিরন্তর নজর।’’

বাঘের পায়ের ছাপ ধরে জঙ্গলের শ্বাস ফিরে পেতে চাইছে দুই রাজ্যই। এখন দেখার, নতুন করিডর কি সত্যিই হবে বাঘেদের আপনভূমি?

Post Comment