নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
পাঁচটি আলাদা সড়ক দুর্ঘটনায় সোমবার রাতেই মৃত্যু হল পাঁচ জনের। জখম হয়েছেন অন্তত দশ জন। দুর্ঘটনাগুলি ঘটেছে ঝালদা, পাড়া, সাঁতুড়ি, মানবাজার ও পুরুলিয়া মফস্বল থানা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সব ক’টি ঘটনায় দ্রুতগামী গাড়ি বা বাইকই ছিল প্রধান কারণ।
প্রথম ঘটনা ঝালদা থানার মুখ্য সড়কের ধারে। সেখানে একটি চারচাকা গাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে একটি ট্রেলার। গুরুতর জখম হন ঝাড়খণ্ডের রাঁচির ডুরাণ্ডা থানার বাসিন্দা বিনয় কাটি (৪২)। তাঁকে দ্রুত ঝালদা গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝালদার ব্রজপুর গ্রামের কাছে গোলা সড়কের ধারে রক্তাক্ত অবস্থায় মোটরবাইক থেকে পড়ে থাকতে দেখা যায় ঝাড়খণ্ডের সিল্লি থানার ছোট মুরির বাসিন্দা রঞ্জিত মাহাতো (৩৭)-কে। পুলিশের অনুমান, কোনও অজ্ঞাতপরিচয় গাড়ি তাঁকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। তাঁকেও ঝালদা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে মৃত্যু হয়।
তৃতীয় দুর্ঘটনাটি ঘটে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কে, ডুমুরডি মোড়ের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, দ্রুতগতির একটি বাইক একটি সাইকেলকে ধাক্কা মারলে তিন জন জখম হন। তাঁদের কুস্তাউর গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে পাড়া থানার পলাশকুড়ার বাসিন্দা লক্ষীকান্ত সহিস (৪২)-কে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। বাকি দুই জনকে ভর্তি করা হয় পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
চতুর্থ দুর্ঘটনা ঘটে সাঁতুড়ি থানার লেদাসোল মোড়ের কাছে। রঘুনাথপুর-শালতোড় সড়কে অজ্ঞাতপরিচয় একটি গাড়ি সাইকেল আরোহী সুকুমার মণ্ডল (৪৩)-কে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। তাঁকে মুরাড্ডি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে মানবাজার থানার মধুপুরের কাছে। বিশরী গ্রাম থেকে ১৫ জন বরযাত্রী নিয়ে হুড়ার দিকে যাচ্ছিল একটি পিকআপ ভ্যান। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি উল্টে যায়। ঘটনায় অন্তত ৯ জন জখম হন। তাঁদের মানবাজার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হলে তিন জনকে পরে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় বিশরীর হেমন্ত মাহাতো (৩৫)-র।
একই রাতে পাঁচটি দুর্ঘটনা এবং পরপর মৃত্যুতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সব ক’টি দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Post Comment