নিজস্ব প্রতিনিধি , পুরুলিয়া:
জেলবন্দি হলেও পড়াশোনার অধিকার থেকে বঞ্চিত হলেন না কোটশিলা কাণ্ডে গ্রেফতার মালা মাহাতো। যে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল সেই পুলিশই নিলো উদ্যোগ। আদালতের বিশেষ অনুমতিতে পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ২০ সেপ্টেম্বর কোটশিলা স্টেশনে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রেল অবরোধের ঘটনায় গ্রেফতার হন পুরুলিয়ার তুলিন গ্রামের বাসিন্দা মালা মাহাতো। বর্তমানে তিনি জেলা সংশোধনাগারে বন্দি। এর মধ্যেই ২৪ সেপ্টেম্বর তাঁর বিএড কোর্সের চতুর্থ সেমেস্টারের পরীক্ষা ছিল। কলেজের নাম জিউদারু গুরুকুল টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট।
জানা গিয়েছে, পরীক্ষার বিষয়টি জানতে পেরেই পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার ব্যবস্থা নেন। মালাকে জানানো হয়, তিনি জেলা সংশোধনাগারের সুপারিন্টেনডেন্টের মাধ্যমে আদালতে আর্জি জানাতে পারেন। কারণ মানবিকতার দৃষ্টিতে প্যারোল বা জামিন ছাড়াও এভাবে পরীক্ষায় বসার ব্যবস্থা করা সম্ভব। তবে সেক্ষেত্রে আদালতের অনুমতিই একমাত্র ভরসা। কেননা আদালতের নির্দেশেই তিনি জেল হেফাজতে রয়েছেন।
পরবর্তীতে জেলা সংশোধনাগার সুপারিন্টেনডেন্টের মাধ্যমে মালার আর্জি আদালতে পেশ করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে পুলিশ সুপারের সুপারিশও আদালতে জমা পড়ে। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালত জানায়, পরীক্ষার দিন মালাকে সংশোধনাগার থেকে এনে তদন্তকারী আধিকারিকের জিম্মায় পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হবে। পরীক্ষা শেষে তাঁকে ফের জেলা সংশোধনাগারে ফিরিয়ে দিতে হবে।
সেইমতো ব্যবস্থা করে পুলিশ। মহিলা পুলিশ অফিসার এবং মহিলা পুলিশ কর্মীদের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছান মালা।
মানবিকতার খাতিরে পুলিশের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। স্থানীয় মহলের মতে, অপরাধের অভিযোগে বন্দি হলেও পড়াশোনার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না। পুলিশের উদ্যোগে আদালতের এই অনুমতি সেই বার্তাই দিল।
সমাজমাধ্যম এদিন মালাময়। কুড়মি সমাজের অনেকেই বলছেন, আজকের এই কলেজ ছাত্রী একদিন সমাজকে নেতৃত্ব দেবেন।
Post Comment