সুজয় দত্ত, আদ্রা :
দেশপ্রেম যখন রঙ তোলে তুলিতে, ছন্দ খুঁজে পায় কলমে, আর সাহসের গল্প ধ্বনিত হয় কণ্ঠে—ঠিক তেমনই এক অনন্য উদ্যোগের সাক্ষী থাকল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশন। সোনবার আদ্রা রেল মিক্সড উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুটি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হলো “অপারেশন সিঁদুর – বীরত্বের দৃষ্টান্ত” এই বিষয়কে কেন্দ্র করে একাধিক সৃজনশীল প্রতিযোগিতা।
ছাত্রছাত্রীদের কচি হাতে ফুটে উঠল রং-তুলির সাহসী প্রতিচ্ছবি। লেখার ছন্দে ধরা পড়ল শহিদদের আত্মত্যাগ, আর কণ্ঠের তীব্রতায় অনুরণিত হলো অটুট দেশপ্রেমের ধ্বনি।
এই আয়োজন শুধু এক প্রতিযোগিতা নয়, ছিল এক আবেগের বহিঃপ্রকাশ—দেশকে ভালোবাসার এক মধুর অভিব্যক্তি।
ছিল চিত্রাঙ্কন, প্রবন্ধ রচনা ও ভাষণ প্রতিযোগিতা। প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিদ্যালয়ের কচিকাঁচারা তাদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে।
ক্যাম্পাস-১ (আদ্রা)র ভাষণ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় দশম শ্রেণির রাজ চক্রবর্তী। দ্বিতীয় স্থান দখল করে ওই শ্রেণিরই সানভি সিংহ। তৃতীয় হয় দশম শ্রেণির মিতা চক্রবর্তী।
চিত্রাঙ্কনে শিশু কিশোর কিশোরীদের প্রতিভা চমকে দিয়েছিল বিচারকদের।
প্রথম হয় দশম শ্রেণির ববিতা হেমব্রম। দ্বিতীয় স্থান দখল করে সপ্তম শ্রেণির নেহা সিংহ।
তৃতীয় স্থানে ছিল দশম শ্রেণির মিতা চক্রবর্তী।
প্রবন্ধ রচনায় যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পায়
দশম শ্রেণির প্রথা শান্তি গোস্বামী,
দশম শ্রেণির সানভি সিংহ ও
দ্বাদশ শ্রেণির জয়া ফিরদৌস।

দ্বিতীয় ক্যাম্পাসেও ছিলো হাড্ডাহাড্ডি প্রতিযোগিতা। ভাষণ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয় সপ্তম শ্রেণির দেবদত্তা ব্যানার্জী। দ্বিতীয় স্থান দখল করে ওই শ্রেণিরই বিদিশা চক্রবর্তী। তৃতীয় হয় সপ্তম শ্রেণির গঙ্গোত্রী দে।
চিত্রাঙ্কনে প্রথম হয় সপ্তম শ্রেণির অরিত্র কুম্ভকার। দ্বিতীয় স্থান দখল করে সপ্তম শ্রেণির চন্দ্রাণী মাঝি। তৃতীয় স্থানে ছিল দশম শ্রেণির নবনীতা বিশ্বাস।
প্রবন্ধ রচনায় যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান পায়
অষ্টম শ্রেণির অভীপ্সা কর্মকার,
সপ্তম শ্রেণির দিব্যা কুমারী ও
সপ্তম শ্রেণির বিদিশা চক্রবর্তী ।
এই প্রতিযোগিতা এক দৃষ্টান্ত হয়ে রইল, যেখানে শিশুমন লিখল সাহসের কথা, আঁকল দেশের প্রতি ভালোবাসা, আর বললো অপারেশন সিঁদুর-এর বীরত্বগাথার কাহিনি।
উল্লেখ্য, এই আয়োজন “অমৃত ভারত স্টেশন যোজনা”-র এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রকল্পের আওতায় আগামী ২২ মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ১০৩টি নতুন রূপে সজ্জিত স্টেশনের উদ্বোধন করবেন। সেই তালিকায় রয়েছে আদ্রা ডিভিশনের গর্ব—জয়চণ্ডী পাহাড় স্টেশন।
এই শুভক্ষণে আয়োজিত হবে এক বিশেষ অনুষ্ঠান, যেখানে এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী এই খুদে শিল্পী, প্রবন্ধকার ও বক্তাদের সম্মান জানানো হবে বিশিষ্ট অতিথিদের উপস্থিতিতে।
আদ্রার আকাশ যেন সেই আগামী দিনের সাক্ষী ছিল—যেখানে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে রাঙিয়ে তুলল তাদের সৃজনশীল ক্যানভাস।
Post Comment