বিশ্বজিৎ সিং সর্দার ও দেবীলাল মাহাতো, আড়শা :
আর নয়। স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণ নিয়ে বহুবার হয়েছে আবেদন নিবেদন। এবার রণং দেহী মহিলারা আড়শার কোরাং-এ স্থিত স্পঞ্জ আয়রন কারখানা তালা বন্ধ করতে চাইলেন। শুক্রবার দিনভর মহিলাদের আন্দোলন চলল কারখানা ঘিরে।
আন্দোলনকারী মহিলাদের পক্ষে পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকের কোরাং গ্রামের বাসিন্দা শিবানী মাহাতো বলেন, “টানা ২০ বছর ধরে স্পঞ্জ আয়রন কারখানার দূষণে আমরা জেরবার। পঞ্চায়েত, ব্লক, এমনকি জেলা প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। একাধিকবার কারখানা কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল, তারা শিল্প করুক তাতে কোন বাধা নেই। কিন্তু তাদের কারখানা থেকে দূষণ যাতে সমাজ জীবনে সমস্যার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু আমাদের এই কথাকে কানে তোলেনি ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। প্রতিনিয়ত কারখানা থেকে বার হওয়া কালো ধোঁয়ার জন্য চাষের জমি আর স্বাভাবিক থাকছে না। ধান থেকে শুরু করে সবজি কালো হয়ে যাচ্ছে। দূষণের জেরে কালো হয়ে যাচ্ছে ঘাস। গরু ছাগলও সেই ঘাস মুখে তুলছে না। অনেক ভেড়া মারা গেছে। ডেকে রাখতে হয়েছে কুয়ো। রান্নাঘরের হেঁশেলে ঢুকে যাচ্ছে কালো ধোঁয়ার চাপ চাপ কালি। ঝড় দিলে তো কথাই নেই। প্রতিদিন এই কারখানার কালি খেতে হচ্ছে আমাদের। রোগ হচ্ছে ফুসফুসে।” গ্রামের গৃহবধূ বন্দনা গোস্বামী বলেন, “বিজয় স্পঞ্জ অ্যান্ড ইস্পাত প্রাইভেট লিমিটেড অবিলম্বে বন্ধ হোক। দরকার হলে কারখানার গেট তালা বন্ধ করে দেবো।” গ্রামের বাসিন্দা রামদাস নুনিবালা গোস্বামী বলেন, প্রতিবার আমরা অভিযোগ করি। আর কারখানার লোক নানা অজুহাত দেখাতে থাকেন। আমাদের এত বড়ো পুকুর থাকতে তিন কিমি দূরে স্নান করতে যেতে হয়। কালো আস্তরণে পুকুর ঢাকা পড়ে গেছে। আর নয়। এবার বন্ধ হোক কারখানা।
এই বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের কোন প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আড়শা ব্লকের বিডিও মইন আহমেদ জানান, “গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। বৃহস্পতিবার থেকেই কারখানা বন্ধ করতে বলা হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি নিয়ে এলে কারখানা চালু করতে দেওয়া হবে।
তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি উজ্জ্বল কুমার বলেন, শ্রমিকদের কথা চিন্তা করে এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধি মেনে কর্তৃপক্ষকে কারখানা চালু করতে হবে।











Post Comment