insta logo
Loading ...

রাসমেলার দুর্ঘটনায় মৃত্যু স্ত্রীর, শোকে মরণঝাঁপ স্বামীর!

রাসমেলার দুর্ঘটনায় মৃত্যু স্ত্রীর, শোকে মরণঝাঁপ স্বামীর!

বিশ্বজিৎ সিং সর্দার, পুরুলিয়া:

শহর পুরুলিয়ার রাসমেলায় ছাদের কার্নিশ বা ব্যালকনি ভেঙে ২ জনের মৃত্যু নয়। ওই ব্যালকনি থেকে অসাবধানবশত পড়ে স্ত্রীর মৃত্যুর পরেই শোক থেকে বিদ্যুৎবাহী তার জড়িয়ে মরণঝাঁপ স্বামীর। এবং মৃত্যু।
শহর পুরুলিয়ার জেলিয়া পাড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজো কমিটির আতশবাজি প্রদর্শনীকে ঘিরে ভাইরাল হওয়া ভিডিও( তবে ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পুরুলিয়া মিরর ) থেকে এই ঘটনায় সামনে এসেছে। যা দেখে শিউরে উঠছেন শহর পুরুলিয়ার মানুষজন। ভাইরাল ভিডিও স্বাভাবিকভাবে পুলিশের হাতেও এসেছে। ওই ভিডিওর প্রেক্ষিতে সমগ্র ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। রাতেই ঘটনাস্থলে ও জখমদের দেখতে দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যান পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ” আতশবাজি প্রদর্শনীর সময় ব্যালকনি ভেঙে এক মহিলার মৃত্যু হয়। আর সেই শোকে তার স্বামীও ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে দেন বলে প্রাথমিকভাবে একটি ভিডিও থেকে বোঝা যাচ্ছে। তিনিও মারা গিয়েছেন। সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম সোনালী ধীবর (৪২)। তার স্বামীর নাম মোহন ধীবর (৫১ )। তাদের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার ঝরিয়াতে। সম্প্রতি পুজোয় তারা তাদের দিদি মিঠু ধীবরের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই বাড়ির পাশেই রাসমেলা। তার পাশেই জেলিয়াপাড়া সার্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটির মন্দির। ফি বছর দ্বাদশীতে ওই পুজো কমিটির আতশবাজি প্রদর্শনী হয়। এবার সেই আতশবাজির প্রদর্শনীতে ভিড় হয়েছিল অন্য বারের চেয়ে বেশ বেশি। মানুষজন বাড়ির দেওয়াল, ছাদের কার্নিশ এবং ব্যালকনিতে চেপে প্রদর্শনী দেখছিলেন। প্রদর্শনীর শেষ মুহূর্তে সোনালী ধীবর অসাবধানবশত ব্যালকনি থেকে পড়ে যান। আর তারপরেই বিদ্যুৎবাহী তার জড়িয়ে ঝাঁপ দেন তার স্বামী। এই ঘটনায় জখম হন ওই বাড়ির মালিক মিঠু ধীবরও। মাথায় চোট রয়েছে তার। তিনি দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এদিন এই ঘটনার পর সেখানে যান পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের ওই বর্ষিয়ান নেতা এদিন রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর তিনি দেবেন মাহাতো গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও যান। তার সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো। ওই হাসপাতালে যান বাঘমুন্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো সহ দলের নেতা-কর্মীরা। হাসপাতালে গিয়ে জখমদের চিকিৎসা বিষয়ে খোঁজ নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কল্যাণ সিনহা রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অভিযান) যোধাবর অভিনাশ ভীমরাও। এলাকার মানুষজন পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই বাড়ির ব্যালকনি আগে থেকেই দুর্বল ছিল। তার মধ্যেই আতশবাজি প্রদর্শনী দেখতে বহু মানুষ সেখানে চেপে বসায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ সেখানে পৌঁছে জখমদেরকে উদ্ধার করে কোলে করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন। ঘটনার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পুরুলিয়া জেলা পুলিশের এই উদ্ধারকাজের তারিফ করছেন শহরের মানুষ।

দেখুন ভিডিও:-

Post Comment