বিশ্বজিৎ সিং সর্দার, বলরামপুর :
মহিলা দলের গোষ্ঠী কোন্দল। আর এই কোন্দলের মাঝে মিড ডে মিল থেকে বঞ্চিত বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়ারা। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বলরামপুরের গেড়ুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্ধ মিড ডে মিল পরিষেবা। স্কুলের রান্না ঘরে ঝুলছে তালা। বিদ্যালয়ে মিলের চাল মজুত থাকলেও বন্ধ মিড ডে মিল। আর সেই কারণেই খাবার পাচ্ছে না ১২৪ জন খুদে পড়ুয়া।
অভিভাবক আবদুল আনসারি, বিনতা কর্মকার প্রমুখর অভিযোগ, বহুদিন ধরে কোনওরকম খাবার পাচ্ছে না ছেলে মেয়েরা। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে স্কুলে আসে তারা। পড়াশোনা চলে বিকেল ৩টা ৩০ পর্যন্ত। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা বাচ্চারা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলেও, খাওয়ার সুযোগ নেই তাদের। যাদের বাড়ি কাছাকাছি, তারা মাঝেমধ্যে বাড়ি গিয়ে খেয়ে আসে। কিন্তু যাদের দূরে বাড়ি তাদের দিন কাটছে শুধু নলকূপের জল খেয়ে।
গেড়ুয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রাকেশ রজক জানিয়েছেন, আগে একটি মহিলা দলের সদস্যরা বিদ্যালয়ে রান্নার কাজ করতেন। পরে আরও ৮টি গ্রুপ এলাকায় তৈরি হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়। বিষয়টি লিখিতভাবে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শককে জানানো হয়েছে। জানানো হয়েছে বলরামপুর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিককেও। তবে এখনোও পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয় নি।
নতুন ভাবে তৈরি হওয়া ৮ মহিলা গোষ্ঠীর সদস্যাদের পক্ষে চম্পক লতা জানান, “একটা গ্রুপই কেন রান্না করবে? সব গ্রুপই রান্না করবে।”
বিদ্যালয়ে রান্নার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরনো মহিলা দলের সদস্যা অষ্টমী মাঝি বলেন,”প্রায় ৬মাস ধরে এই মিড ডে মিল বন্ধ হওয়ার কারণে আমাদের বাচ্চারাই খাবার পাচ্ছে না। আমিও চাই রান্নার প্রক্রিয়া পুনরায় চালু হোক, কিন্তু বিডিও বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যদি অন্যান্য গ্রুপের মহিলারা রান্নার দায়িত্ব পায় তাহলেই সেটা সম্ভব, না হলে হবে না। “
বলরামপুর সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌগত চৌধুরী জানান, “যতক্ষণ না ছাত্র সংখ্যা বাড়ছে, ততক্ষণ অন্য গ্রুপ আনা সম্ভব নয়। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে, ওই গ্রামের মহিলা দলের সদস্যারা জোর করে রান্নাঘরে তালা মেরে রেখেছেন। আর এক বার তাঁদের সাথে আলোচনা করে দেখা হবে। যদি তাতেও কোনো কাজ না হয়, তাহলে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
Post Comment