insta logo
Loading ...
×

আশ্রয় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রর পরিত্যক্ত ঘর, তবুও মেলেনি আবাস, দীর্ঘশ্বাস সম্বল সপুত্র বৃদ্ধার

আশ্রয় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রর পরিত্যক্ত ঘর, তবুও মেলেনি আবাস, দীর্ঘশ্বাস সম্বল সপুত্র বৃদ্ধার

দেবীলাল মাহাত, আড়শা:

দশ বছর আগে প্রবল বর্ষণে ভেঙে পড়েছে থাকার একমাত্র ছাউনি। তারপর থেকেই পরিত্যক্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসবাস করছে বৃদ্ধা মা ও ছেলে। আশায় ছিলেন এবার হয়তো বাংলার আবাস যোজনা প্রকল্পে নাম আসবে । কিন্তু নাম না আসায় হতাশ আড়শা ব্লকের করনডি গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা কল্যাণী মুখোপাধ্যায় ও তার একমাত্র ছেলে দুলাল মুখোপাধ্যায়।
আড়শা ব্লকের করনডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গা ঘেঁষে ছোট পরিত্যক্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘর। সেই ঘরেই দশ বছর ধরে বসবাস করছেন মা ও ছেলে। স্বামী মারা গেছেন দশ বছর আগেই । তারপর থেকেই ঠাঁই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। আগে এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রর সামনেই নিজের ভিটেতে মাটির বাড়িতে থাকতেন তারা। কিন্তু প্রবল বর্ষণে সেই ঘর ভেঙে পড়ে গিয়ে মাটিতে মিশে যায়। তাদের অবস্থা দেখে এগিয়ে আসেন গ্রামের বাসিন্দারা। তারাই পরিত্যক্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মা ও ছেলেকে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। বৃদ্ধা কল্যাণী মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে এই উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বাস করছি। আমার বিধবা ভাতা ও ছেলের গৃহ শিক্ষকতার সামান্য টাকায় কোনো রকমে সংসার চলে। বাড়ি তৈরি করার আর্থিক সংগতি আমার নেই। সরকার থেকে একটি বাড়ি পেলে ভালো হতো।”
বলতে বলতে অশক্ত শরীরে বসে পড়েন বৃদ্ধা। গলাটা কেমন যেন ভারী হয়ে যায় বৃদ্ধার।
বৃদ্ধার ছেলে দুলাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাড়ি তৈরির জন্য দুবার প্রশাসনের কাছে আবেদন করে ছিলাম। তবুও বাড়ি হয়নি।”
আড়শা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুলেখা কিস্কু জানান, ” বৃদ্ধা ও তার ছেলের অবস্থার কথা আমরা শুনেছি। এবার আবাস যোজনার যে তালিকা বের হয়েছে, তাতে তাদের নাম নেই। পরবর্তী তালিকায় যাতে তাদের নাম থাকে সেই জন্য ব্লক প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।”
প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছ থেকে আশ্বাস মিলেছে ঠিকই, কিন্তু আশ্বাস যতদিন বাস্তবের মাটি দেখবে, ততদিন পর্যন্ত এই পরিত্যক্ত উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই বাস করতে হবে বৃদ্ধা কল্যাণী মুখোপাধ্যায় ও তার ছেলে দুলাল মুখোপাধ্যায়কে। সেই ছোট্ট ঘরেই একপাশে তক্তপোষ, একটি খাটিয়া, একটি সাইকেল, রান্নার উনুন, বাসনপত্র। বিদ্যুৎ নেই। তাই দিনের বেলা ভরসা জানালার আলো আর রাতের বেলা মোমবাতি,লম্ফের আলো।

Post Comment