দেবীলাল মাহাত, আড়শা:
নীল আকাশে সাদা কালো মেঘের ভেলা। চারদিকে কাশফুলের শোভা। আকাশে- বাতাসে পুজোর গন্ধ। তবুও বিষাদের সুর আড়শা ব্লকের কাঞ্চনপুর গ্রামের মাহালি পাড়ায়। থিম ও প্লাষ্টিকের বাজারে কদর নেই বাঁশের কাজে যুক্ত শিল্পীদের। তাই পুজো এলেও মন্ডপ তৈরির জন্য ডাক পড়ে না প্রথাগত বাঁশ শিল্পীদের।
আড়শা ব্লকের কাঞ্চনপুর গ্রামের ৪০টি মাহালি পরিবার বংশানুক্রমে বাঁশ শিল্পের সাথে যুক্ত। দুর্গাপুজা এলেই শিল্পীদের কদর বেড়ে যেতো। মন্ডপ সাজানোর জন্য ডাক পড়তো তাদের। বাঁশের নানা কারুকার্যে তাদের হস্তশিল্প সাজিয়ে তুলতো মন্ডপকে।এইসময় শিল্পীরা নাওয়া- খাওয়ার সময় পেতো না ।বাড়ির সকলেই শিল্পের সাথে যুক্ত হয়ে পড়তো। অতীতে পুজো মন্ডপ সাজানোর জন্য ডাক আসতো ঝাড়খণ্ডের রাঁচি, ধানবাদ, বোকারো থেকে।
কিন্তু এখন সময় বদলেছে। বদলেছে পরিস্থিতি। মানুষের রুচি, ধ্যান, ধারনার বদলেই বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের দিন এখন নেই। জায়গা দখল করেছে থিমের পুজো। প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্র। যার প্রভাব পড়েছে বাঁশ শিল্পের সাথে যুক্ত শিল্পীদের।তাই বড় বাজেটের কমিটির উদ্যোক্তারা এখন মন্ডপ তৈরির জন্য প্রথাগত বাঁশ শিল্পীদের ডাকেন না। তাই বিভিন্ন পেশার কাজে যুক্ত শিল্পীরা যখন পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত। তখন বাড়িতে বসেই কুলো, ঝুঁড়ি, টোকিয়া, ডালা বুনতে ব্যস্ত কাঞ্চনপুরের মাহালি পরিবার গুলো। কাঞ্চনপুর গ্রামের বাঁশ শিল্পী চিনিবাস মাহালি , সন্তোষ মাহালি জানান, “পুজো এলেই আগে আমাদের ভিন রাজ্য থেকে ডাক আসতো। পরিবারে বাড়তি রোজগারও হতো। কিন্তু এখন আর তা হয় না। অথচ এই সময় বাড়তি আয়ের। এর জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকতাম। এখন থিমের বাজারে আমাদের আর ডাক পড়ে না।” আক্ষেপ ঝরে পড়ে শিল্পীর গলায়।
Post Comment