insta logo
Loading ...
×

পুরুলিয়ার ৪ আদিবাসী গুণীজনকে আজ সম্মাননা জানাচ্ছে রাজ্য সরকার

পুরুলিয়ার ৪ আদিবাসী গুণীজনকে আজ সম্মাননা জানাচ্ছে রাজ্য সরকার

বিশ্বজিৎ সিং সর্দার, পুরুলিয়া:

সাহিত্য থেকে সংস্কৃতি। সমাজ সংস্কার থেকে খেলাধূলা। পুরুলিয়ার ৪ গুণীজনকে আজ শুক্রবার
বিরসা মুন্ডার ১৫০ তম জন্মবার্ষিকীতে রাজ্য সরকারের বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন। কলকাতার
নিউটাউনে আদিবাসী ভবনে তাঁদের আদিবাসী গুণীজন অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত করবে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী ও আদিবাসী উন্নয়ন বিভাগ। পুরুলিয়ার চার কৃতীর পাশাপাশি সম্মাননার তালিকায় রয়েছেন উত্তরবঙ্গের লেপচা জনজাতির কৃতী।
জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার ৪ কৃতী হলেন
মানবাজার ২ নম্বর ব্লকের পিটিদিরি গ্রামের সঞ্জয়কুমার টুডু, কাশিপুর থানার পাবড়া গ্রামের বিপিন টুডু, পুঞ্চা ব্লকের কুদা গ্রামের জলধর শবর ও বলরামপুরের ঘাটবেড়ার
ফুলচাঁদ হেমব্রম।
এই চার আদিবাসী গুণীজনের পাশাপাশি সম্মানিত হচ্ছেন উত্তরবঙ্গের কালিম্পং জেলার লাভা ব্লকের গীতডাবলিং-র লোয়ার
বিয়ং-র জোয়াকিম
লেপচা ও ওই জেলারই নিমবঙ্গ খাসমহলের খারেল গাঁওয়ের রেন টেন তেসরিং লেপচা।

২০০৩ সাল থেকে সাহিত্য সাধনায় মগ্ন সঞ্জয়কুমার টুডু।২০১৭ সালে তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয়। বিষয় ছিল করম পরব। বইয়টির নাম জাওয়া-কারাম। ২০১৭ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তাঁর সাতটি বই । কাশিপুর এলাকার বিপিন টুডু অধুনা বৃহত্তর কলকাতার বাসিন্দা। দক্ষিণেশ্বর এলাকায় বসবাস করেন তিনি। পেশায় তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সট্রুমেন্টেশন অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্সের অধ্যাপক। চায়ের গুণগত মান কেমন হবে সেই যন্ত্রের উদ্ভাবক দলের অন্যতম সদস্য তিনি। তাঁর প্রাথমিক পাঠ পুরুলিয়ার সোনাথলিতে। অন্যদিকে শবর সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য অক্লান্ত পরিশ্রমের আরেক নাম জলধর শবর। বিভিন্ন সময়ে শবর সমাজে উল্লেখযোগ্য সংস্কারকের ভূমিকায় দেখা গেছে জলধর শবরকে। শবর সমাজের নানান সমস্যা সমাধানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন তিনি। শবর জনজাতিকে সমাজের মূল স্রোতে নিয়ে আসার অন্যতম উদ্যোক্তা তিনি। একটি বিচ্ছিন্ন জনজাতিকে এভাবে প্রাণিত করার কারণেই তাঁকে রাজ্য এই সম্মাননা প্রদান করছে। একটা সময় শবর জনজাতিকে ‘অপরাধী জনজাতি’ হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘৃণিত অবস্থান থেকে সেই জনজাতিকে সমাজের মূল স্রোতে কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায় তার দিশা দেখিয়েছিলেন জলধর বাবু। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক পদে রয়েছেন তিনি। তাঁর তত্ত্বাবধানে শবর সমিতির বিভিন্ন কাজ পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলা জুড়ে শবর জনগণের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নিয়েছে বিশেষ ভূমিকা। সম্মাননা প্রসঙ্গে জলধর বাবু বলেন, “এত বড় সম্মান আমি আগে কখনও পাইনি।খুবই ভালো লাগছে। তবে এখনও অনেক কাজ বাকি।”
ক্রীড়া ক্ষেত্রে এই সম্মাননা পাচ্ছেন বলরামপুরের ফুলচাঁদ হেমব্রম। শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও তিনি কলকাতা ময়দানের সাড়া জাগানো দল মহামেডান, টালিগঞ্জ, ডায়মন্ডহারবার, পিয়ারলেস প্রভৃতি দলে ফুটবল খেলে ক্রীড়া প্রেমীদের নজর কেড়েছেন। কখনও সাইড ব্যাক, কখনও মিডফিল্ড। কোচ যে জায়গাতেই তাঁকে খেলিয়েছেন, তাঁর পারফরম্যান্স চোখ টেনেছে ।
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রমন্ত্রী তথা আদিবাসী গুণীজন সম্বর্ধনার চেয়ারম্যান সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, ” যে সকল গুণী মানুষ এই সম্মাননা পাচ্ছেন তারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন। তাদের কাজের ভিত্তিতেই আমরা তাদেরকে সম্মাননা প্রদান করে সমৃদ্ধ হবো। “

Post Comment