দেবীলাল মাহাত, আড়শা:
সমস্যার সমাধান চকলেট! এ কী করছেন বিডিও? আশ্চর্য এক দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী হলো আড়শা ব্লক অফিসে। অন্য কোন টেবিলে নয়, খোদ বিডিও সাহেবের চেম্বারে। টেবিলে রাখা এক জার চকলেট।
শুধু সমস্যা সমাধান নয়। অভাব অভিযোগ নিয়ে গেলেই ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সেই জার থেকে হাতে ধরিয়ে দেন চকলেট। সরকারী আধিকারিকের কাছ থেকে চকলেট পেয়ে চমকে যাচ্ছেন সকলেই।আর বিডিওর এমন উদ্যোগে খুশি এলাকার মানুষ।
অযোধ্যার পাদদেশে চারিদিকে সবুজের সমারোহের মাঝে আড়শা ব্লক। এই ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের পদে যোগ দিয়েছেন গোপাল সরকার। মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে তিনি ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের পদে বসেছেন প্রথম বার। পেশাগত দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে পালন করে, মিশে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। শোনেন তাদের অভাব অভিযোগের কথা। তিনি জানান, প্রচুর সাধারণ মানুষ অভাব অভিযোগ সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসেন। আবার অনেকে সাহস করে কাছে আসতে পারে না। ফলে তাদের সমস্যা থেকেই যায়। তাই তাদের সাহস জোগানোর জন্যেই ছোট্ট এই প্রয়াস। তিনি জানান যারা অভাব অভিযোগ নিয়ে আসেন, তাড়াতাড়ি সেই সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করা হয়। আবার কিছু কিছু সমস্যা মেটাতে বেশি সময় লেগে যায়। ফলে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন। কোনো মানুষ যাতে হতাশায় না পড়েন সেই জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে করে চকলেট। ছোট্ট উপহার। সেটা পেয়ে সেই মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটে ওঠে। বিডিও অভাব অভিযোগ নিয়ে আসা মানুষের হাতে চকলেট তুলে দেন ঠিকই, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হোক তিনি চান না। একজন সরকারী আধিকারিক হয়ে আড়শা ব্লকের মানুষের সমস্যাগুলো অফিসে বসে বা এলাকায় গিয়ে সমাধান করাই তাঁর কাজ। এই ভাবেই মানুষের সাথে থাকতে চাই।
পেনশনের সমস্যা নিয়ে বিডিও অফিসে এসেছিলেন ষাটোর্ধ্ব আড়শার সন্তোষ কুমার। তিনি বলেন, সাহেব এর সঙ্গে কথা বলার পর বেরিয়ে আসছি। এমন সময়, সাহেব হাতে ধরিয়ে দিলেন একটি চকলেট। প্রথমে ইতস্তত করলেও সাহেবের আন্তরিকতা দেখে চকলেট নিয়ে হাসিমুখে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলাম।
বিডিও জানান, বিভিন্ন বিষয় সমাধানের জন্য ব্লকে আলাদা আলাদা দপ্তর রয়েছে। কোন দপ্তরে গেলে ওই সমস্যার সমাধান হবে, সে বিষয়ে অনেকেই অবগত নন। সেই কারণেই তারা আমার কাছে এসে উপস্থিত হন। সেই ক্ষেত্রে তাদের বুঝিয়ে বলা হয় কোন দপ্তরে গেলে সমস্যার সঠিক সমাধান হবে। তারপরেই তিনি তার হাতে তুলে দেন একটি করে চকলেট। সরকারি উচ্চ পদস্থ আধিকারিক হয়েও এই ভাবেই সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যান গোপাল বাবু। বিডিওর এই কাজে খুশি আড়শা ব্লকের মানুষ।
Post Comment