নিজস্ব প্রতিনিধি , পুরুলিয়া:
সরকারের খাস জমিতে হচ্ছে সরকারি প্রকল্প। আর তাতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা। প্রায় ১২ কিমি ঘুর পথে যাতায়াত করতে হবে প্রায় ১০টি গ্রামের মানুষকে। সমস্যা গভীর। এই সমস্যার সমাধান সূত্র বার করতে বারে বারে প্রশাসনকে জানানো হলেও নিট ফল শূন্য। এবার বাধ্য হয়ে রাস্তা অবরোধ করলেন বাসিন্দারা।
ঘটনাস্থল পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঠিক পাশে। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে প্রায় পৌনে এগারোটা পর্যন্ত অবরোধ চলে। পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে অর্জুনজোড়া যাওয়ার রাস্তায় বেঁধে যায় যানজট। সমস্যায় পড়েন ওই এলাকার মানুষজন। পুলিশ অবশ্য পরে ঘটনাস্থলে এসে অবরোধ তুলে দেয়।
যে রাস্তা নিয়ে আপত্তি তা অবস্থিত
পুরুলিয়া ২ নম্বর ব্লকের পিঁড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর মৌজায়। এখানকার প্রায় ১০ একর সরকারি খাস জমিতে নির্মিত হবে শিশুদের হোম। আর সেই উদ্দেশ্যে জনশিক্ষা প্রসার বিভাগকে জমিটি হস্তান্তরিত করা হয় পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গত ২৭শে ফেব্রুয়ারি পুরুলিয়া শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ার ব্যাটারি গ্রাউন্ডের প্রশাসনিক জনসভা থেকে
শিশুদের জন্য এই হোমের কাজের সূচনা করেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই এলাকায় সম্পূর্ণ জমিতে যদি শিশুদের জন্য হোম হয়, তবে গ্রামীণ রাস্তা ওই প্রকল্পের সীমানার ভেতর চলে যাবে। এই অভিযোগ তুলে বারে বারে স্থানীয়রা আপত্তি জানিয়ে গেছেন। প্রশাসন তাদের আপত্তিতে কান দেয়নি। প্রস্তাবিত প্রকল্পস্থলের তিন দিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়।
বলরামপুর, ডাবর, নারুরডি, মুকরুডি, শিমুলটাড়, পালঞ্জা প্রভৃতি গ্রামগুলি রাস্তার বন্ধ হয়ে গেলে সমস্যায় পড়বে।
এতদিন অভিযোগ আবেদনপত্রে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার প্রস্তাবিত প্রকল্পস্থলের আরেকটি দিকে সীমানা প্রাচীরের কাজ শুরু হতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, ওই সীমানা প্রাচীর দেওয়া হয়ে গেলে তাদের আসা যাওয়ার পথ প্রকল্প স্থলের ভেতর চলে যাবে। তারা আর ওই রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন না। এলাকার অধিবাসী কাজল পাল, মেনকা মাহাতো প্রমুখ বলেন, ” আমাদের রাস্তার জন্য ১২ ফুট ছেড়ে সরকারি প্রকল্পের হোম হোক, একথা প্রশাসনকে বারবার বলেছি।রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে আমাদেরকে প্রায় ১২ কিমি ঘুরে আসতে হবে। আমরা প্রচুর সমস্যায় পড়বো। প্রশাসন কথা শুনছে না দেখে আমরা অবরোধ করতে বাধ্য হই।” অবরোধে সামিল হয়েছিলেন মহিলারাও। প্ল্যাকার্ড হাতে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান তারা। তাতে লেখা, ‘রাস্তা চাই’। বাসিন্দাদের দাবি, ওই রাস্তা সরকারি প্রকল্পের জন্য বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামের মানুষজনকে গোপাল মোড়, তেলকল পাড়া, শ্মশান কালী মন্দির, ডিয়ার পার্ক হয়ে ওই এলাকায় আসতে হবে। যা প্রায় ১২ কিমি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জনশিক্ষা প্রসার দপ্তর রাস্তার জন্য কোন জমি ছাড়তে চাইছে না। বিষয়টি নিয়ে পুরুলিয়া জনশিক্ষা প্রসার দপ্তরের আধিকারিক বাসুদেব মন্ডলের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
Post Comment