দেবীলাল মাহাতো, আড়শা:
দোরগড়ায় কালিপুজা। কালিপুজার সময় সাবেক মানভূমে শুরু হয় বাঁদনা পরব। থাকে কৃষিজীবি মানুষের ব্যস্ততা। বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত ঘুর্নিঝড় ‘ডানা’-র পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে পুরুলিয়াতেও । তার ফলে থমকে গিয়েছে সেই পরবের প্রস্তুতি। এই অবস্থায় কি ভাবে ঘরকে সাজিয়ে তুলবেন ,তাই নিয়ে আতান্তরে পড়েছে মহিলারা । শীতের আগমনে অসময়ের নিম্নচাপ উদ্বেগ বাড়িয়েছে তাদের।
আমন ধান বাড়িতে তোলার আগে বাঁদনা পরবে মাতেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম সহ বিস্তীর্ণ ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলের কৃষিজীবি মানুষজন। এই পরব আদিবাসী জনজাতিদের মধ্যে ‘সহরায়’ নামে পরিচিত। এই পরবকে ঘিরে ঘর সাজানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন মহিলারা। মাটির ঘর গুলোকে মাটি , গোবরের প্রলেপ দেওয়া থেকে শুরু করে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক রং দিয়ে সুন্দর ভাবে সাজিয়ে তোলেন । আঁকেন নানা রকম নকসা,ফুল। মাটির দেওয়াল গুলো হয়ে ওঠে ক্যানভাসে আঁকা এক একটি ছবি। দুর্গাপুজার পরেই শুরু হয় এই দেওয়াল চিত্রের ধাপের পর ধাপ সেই কাজ। কিন্তু বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত ঘুর্নিঝড় ‘ডানা’-র পরোক্ষ প্রভাবে থমকে গিয়েছে দেওয়ালে মাটি দেওয়া থেকে রঙের কাজ। ঝড়- বৃষ্টির পরোক্ষ প্রভাবে জেলায় দু’দিন ধরে একনাগাড়ে হচ্ছে বৃষ্টি। বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল ভিজে যাচ্ছে। গলে পড়ছে মাটির দেওয়াল। সুপার সাইক্লোন ‘ডানা’ ধানচাষ নিয়ে যেমন চাষিদের চিন্তায় ফেলেছে। চিন্তায় ফেলেছে বাঁদনা পরবের প্রস্তুতি নিয়েও।সবমিলিয়ে বাঁদনা পরবের আগে বড়সড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই সাইক্লোন।
বিভিন্ন গ্রামের মহিলারা জানান, দেওয়ালে মাটি দেওয়ার কাজ প্রায় শেষের দিকে। শুধু রঙের কাজ বাকি ছিল। কিন্তু দেওয়াল না শুকালে রঙের কাজ করা যায় না। ঘুর্নিঝড় ‘ডানা’ সেই কাজে গোঁদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৌরাদাগ গ্রামের ঝর্না মাহাত,বামুনডিহা গ্রামের সুগা মাহাত বলেন, পরবের আগে ঘর গুলো সাজানোর কাজ শেষ করা বেশ সমস্যার।
কারন নিম্নচাপ সরে গেলেও মাটির দেওয়াল শুকোতে সময় লাগবে। এর-ই মধ্যে এসে পড়বে পরব।
Post Comment