insta logo
Loading ...
×

জিনাতকে খুঁজছে অশরীরী আশিক, তাকে খুঁজতে নাকাল বন দফতর

জিনাতকে খুঁজছে অশরীরী আশিক, তাকে খুঁজতে নাকাল বন দফতর

সুজয় দত্ত ও বিশ্বজিৎ সিং সর্দার :

১২ দিনে প্রায় ৩০ কিমি ব্যাসার্ধ জুড়ে ঝাড়খন্ডে ঘুরে বেড়িয়েছে সে। তারপর বাংলার জঙ্গলমহলের তিন জেলা জুড়ে জিনাতের ফেলে আসা পথে চরকিপাক খেয়ে তার খোঁজেই পাগলপারা তার আশিক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।

কিন্তু কোথায় সে?ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির বাঁশপাহাড়ি বনাঞ্চলের ৫০ টা নাইট ভিশন ক্যামেরা থেকে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান এক নং ও যমুনা বনাঞ্চলে ১৫ টা ট্র্যাপ ক্যামেরা বসিয়ে সেখানে ধরা দেয়নি সে। বুধবার অন্য অন্য এলাকায় আরও নতুন করে বসানো হয় ২০ টি ট্র্যাপ ক্যামেরা। পাশাপাশি ড্রোন উড়িয়েও নজরদারি চালানো হয়। কোন কিছুই ধরতে পারেনি প্রেমিক প্রবরের ছবি। ঝাড়খন্ডে থাকাকালীন চান্ডিলের একাধিক জায়গায় সেখানকার মানুষজন রয়্যাল বেঙ্গলের দর্শন পেয়েছিলেন, সরকারি ভাবে পদচিহ্ন ছাড়া আর কোন সন্ধান মেলেনি। সরকারি ভাবে আজও সে ‘অশরীরী’।

গতকাল তিন জায়গায় দেওয়া হয়েছিল ছাগলের টোপ। জিনাতের প্রেমী সেই টোপ না গেলায় বুধবারের অভিযানে হাট থেকে কিনে শূকরের মাংস রাখা হয় একটি খাঁচায়। অন্য দুই খাঁচাতে অবশ্য ছাগলই রাখা আছে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ান ব্লক ছুঁয়ে থাকা মানবাজার ২ নং বনাঞ্চলের বড়গোড়া জঙ্গল এলাকায় বুধবার সন্ধ্যার পর খাঁচা পেতে শূকরের মাংস দেওয়া হয়। সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভের ৫ জনের দল এখন ঘাঁটি গেড়েছে সেখানেই।

বুধবার দিনভর মানবাজার ২ নং ও বান্দোয়ানের তিনটি বনাঞ্চল বান্দোয়ান ১, বান্দোয়ান ২ ও যমুনা বনাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ খোঁজা হয়। জিনাতের আশিক ওই রয়্যাল বেঙ্গলের সঠিক অবস্থান বুঝতে তার পাস্ট রেকর্ড প্রয়োজন বলে মনে করছেন সজনেখালির বিট অফিসার তথা জিনাতকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করা মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস। তিনি বলেন, “এই ধরনের কঠিন অভিযানে শুধু খাঁচা পেতে টোপ দেওয়া বা জাল দিয়ে ঘেরাতেই সাফল্য আসে না। বাঘের মনস্তত্ত্ব বুঝতে হয়। জানতে হয় পাস্ট হিস্ট্রি। সেই হিসাবে অভিযানের রূপরেখা তৈরি করা হয়। আমরা সেই কাজ করারই চেষ্টা করছিl”

কিন্তু তাতেও সমস্যা। কোথা থেকে এসেছে জিনাতের আশিক সেটাই বুঝে উঠতে পারেনি ঝাড়খন্ড
বনবিভাগ সহ বাংলার অরণ্যভবন। আর তাই বাঘের ‘পাস্ট হিস্ট্রি’ অজানা। ঝাড়খন্ডে এই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থাকাকালীন পালামৌ টাইগার রিজার্ভের আধিকারিকরা সেখানে বসে থাকলেও তারাও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে এই বাঘ তাদের এলাকা থেকে এসেছে। ফলে ঝাড়খণ্ডের পাশাপাশি অরণ্যভবনও অন্যান্য টাইগার রিজার্ভের সঙ্গে যোগাযোগ করে বোঝার চেষ্টা করছে ওই বাঘটি এসেছে কোথা থেকে? হতে পারে পালামৌ। হতে পারে ঝাড়খন্ডের বেতলা কিংবা হাজারিবাগ। হতে পারে ওড়িশার সিমলিপাল, এমন কি ছত্তিশগড়ও।

রাজ্যের মুখ্য বনপাল (দক্ষিণ পশ্চিম চক্র) বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ” আগের কোন টোপ কাজে লাগেনি। তাই একটি এলাকা থেকে সেই টোপ তুলে নেওয়া হয়েছে। নতুন করে পৃথক এলাকায় শূকরের মাংস দেওয়া হয়েছে।”

Post Comment