সুজয় দত্ত ও দেবীলাল মাহাতো :
ভূমিকন্যার সাফল্যে খুশির জোয়ারে ভাসছে জঙ্গলমহল আড়শা। রাজ্য জয়ী নাতনি দেবদত্তাকে মাছের মাথা দিয়ে মুড়ি ঘন্ট করে খাওয়াবেন বলে অপেক্ষায় ঠাকুমা। প্রত্যন্ত জামবাদ গ্রামে এখন উৎসবের মেজাজ।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় (মেইন) তাদের গ্রামের ভূমিকন্যা দেবদত্তা মাঝি রাজ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে যে।
বাবা জয়ন্ত কুমার মাঝি ও মা শেলি দাঁ কর্মসূত্রে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়াতে থাকেন। তাঁদের সঙ্গেই কাটোয়ার বিদ্যাসাগর পল্লীতে থাকে সে। তবে মাঝে মধ্যেই পুরুলিয়ার আড়শা থানার জামবাদ গ্রামে আসে দেবদত্তা। এই গ্রামের বাড়িতেই রয়েছেন তার ঠাকুরদা, ঠাকুমা সহ আত্মীয়স্বজনরা।

দেবদত্তার সাফল্যে ভীষণ খুশি ঠাকুরদা, ঠাকুমা, জেঠা,কাকুরা। ঠাকুরদা নিধিরাম মাঝি বলেন, “নাতনির এই সাফল্যে আমি খুব খুশি। ছোট থেকেই ও পড়াশোনায় খুব ভালো।” ঠাকুমা পুটরি মাঝি বলেন, “ওর রেজাল্টে আমার ভীষণ ভালো লাগছে। নাতনি মাছের মুড়ো খেতে খুব ভালোবাসে। বাড়িতে এলে মাছের মাথা দিয়ে মুড়িঘন্ট করে খাওয়াবো।” জামবাদ গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ কুমার বলেন, “আমাদের গ্রামের মেয়ে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগছে। আমাদের গ্রামের নাম আবার উজ্জ্বল করেছে ও। ওর আরও সাফল্য কামনা করি।”
মঙ্গলবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার (মেইন) ফল প্রকাশ করেছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি। তাতে দেখা যায় দেবদত্তা মাঝির প্রাপ্ত পার্সেন্টাইল ৯৯.৯৯৯২১। যা সারা ভারতবর্ষের মধ্যে পঞ্চদশ। আর আমাদের রাজ্যের মধ্যে প্রথম। দেবদত্তার রাজ্য জয় কিন্তু এই প্রথম নয়।
দুবছর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যের মেধা তালিকায় প্রথম স্থান দখল করেছিল দেবদত্তা। মাধ্যমিকে তার প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৭০০র মধ্যে ৬৯৭। ইংরেজি, অংক, ভৌত বিজ্ঞান, জীবন বিজ্ঞান ও ভূগোলে ১০০তে ১০০ পেয়েছিল সে। বাংলায় ৯৮ ও ইতিহাসে ৯৯ পেয়েছিল দেবদত্তা।
এবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় সে বাংলায় প্রথম স্থান অধিকার করায়
জঙ্গলমহল পুরুলিয়া জুড়ে আবার খুশির হাওয়া। এবার সে উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। বুধবার দেবদত্তার বাবা জয়ন্তকুমার মাঝি এসেছিলেন পুরুলিয়া সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনি বলেন, “আমার মেয়ে মাধ্যমিকের পর আবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আমরা ভীষণ খুশি। লেখাপড়ার বিষয়ে মেয়েকে আমরা কোনোদিন চাপ দিইনি।” দেবদত্তা বলে, “সর্বভারতীয় জয়েন্ট পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রথম হয়ে খুব ভালো লাগছে।” আপাতত উচ্চমাধ্যমিক লক্ষ্য তার। তারপর জেইই মেইনের দ্বিতীয় সেশনের পরীক্ষা। এতদিন জয়েন্টের প্রস্তুতির জন্য উচ্চমাধ্যমিকের দিকে তেমন নজর দেওয়া হয়নি। এবার পাখির চোখ উচ্চমাধ্যমিক।











Post Comment