নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
স্কুলের খাতায় অংক মানেই আতঙ্ক—এ ছবি বদলাতে উদ্যোগী পুরুলিয়া জেলা পুলিশ। জঙ্গলমহলের এই প্রান্তিক জেলায় ভীতি সরিয়ে অঙ্ককে আনন্দের খেলা করে তুলতে জেলা পুলিশের নতুন উদ্যোগ ‘সমর বাগচী ম্যাথেমেটিক্স ট্যালেন্ট সার্চ ২০২৫’। শিক্ষা সংস্থা ফিলিক্স স্কুল অফ এডুকেশন ও চিন্তা অ্যাকাডেমির সহায়তায় এই প্রথম এমন প্রকল্পের আয়োজন। উদ্যোগের লক্ষ্য শুধু পরীক্ষার নম্বর বাড়ানো নয়—আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের মঞ্চে পুরুলিয়ার পড়ুয়াদের পৌঁছে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য। যেখানে অংশ নেয় বিশ্বের দেড়শো দেশের প্রতিযোগী। প্রায় ৪৮০০ জন নাম নথিভুক্ত করে প্রকল্পে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন থানা এলাকার স্কুল–কলেজে পরীক্ষায় বসে ৪১০০ জন। পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় বলরামপুরই এগিয়ে। ১৫৩০ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষার মেধাতালিকা থেকে বাছাই করা হয় ২৪০ জনকে। তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় বেলগুমা পুলিশ লাইনে। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাতো, সহ–সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঘমুন্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাতো-সহ অন্যান্য অতিথিরা।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই জেলার ছেলেমেয়েরা অঙ্ককে শুধু পড়ার বিষয় বলে না দেখে, নতুনভাবে ভাবতে শিখুক। অঙ্কের প্রতি ভীতি কাটিয়ে যেন তারা আস্থা খুঁজে পায়। সেটাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। “

এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নানৃতম। সেই সংস্থার সম্পাদক রঞ্জনা সেনগুপ্ত বলেন, “বাচ্চাদের মধ্যে অঙ্কের প্রতি ভালোবাসা জন্মালে তারা সমস্যাকে অন্যভাবে ভাবতে শিখবে। তারা নতুন অঙ্ক তৈরি করবে—এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সেই পথ ধরে বাচ্চারা পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়তে পারবে।”
এই ২৪০ জনের মধ্য থেকে ৪০ জনকে নির্বাচন করেছে সহযোগী বেসরকারি সংস্থা। এই ২৪০ জন তিন মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ পাবে অঙ্কের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে।প্রকল্পে রয়েছে দুটি বিভাগ পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি,
এবং দশম শ্রেণি উত্তীর্ণদের জন্য আলাদা বিভাগ।
পুরুলিয়ার শিক্ষাঙ্গনে এই উদ্যোগ এক নতুন দিশা দেখালো— যেখানে পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার পথেও হয়ে উঠছে সহযাত্রী।











Post Comment