বিশ্বজিৎ সিং সর্দার, পুরুলিয়া :
স্পেশাল ছাব্বিশ সিনেমায় পুলিশ চক্রীদের কাছে হেরে গিয়েছিল। বাস্তবে পুলিশের লম্বা হাত থেকে বাঁচতে পারল না কোটশিলার বামনিয়া গ্রামে ইনকাম ট্যাক্স অফিসার সেজে ডাকাতি করা চক্রীরা। শনিবার ঝাড়খণ্ডের একের পর এক এলাকায় রেইড করে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ পায় সাফল্য। রবিবার পুরুলিয়া বেলগুমা পুলিশ লাইন থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনায় দুই মহিলা সহ গ্রেফতার করা হয় ৭ জনকে। এঁদের শনাক্তকরণ প্যারেড হবে বলে ধৃতদের বিশদ দেওয়া হচ্ছে না।” তবে তিনি বলেন, “ধৃতদের একজন নিজেকে সিআরপিএফ কনস্টেবল বলে পরিচয় দিয়েছে। আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি।” স্থানীয়দের যোগ ছিল ঘটনায়। একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,” যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে দুজন স্থানীয়। “

গত ৮ এপ্রিল কোটশিলা থানার বামনিয়া গ্রামের সোলজার বিড়ি কোম্পানির মালিক কিরিটি কুমারের বাড়িতে ৭ জন পুরুষ ও ১ জন মহিলা মিলে মোট আটজন ঢোকে। আয়কর বিভাগের পরিচয় দিয়ে একটি নোটিশ ধরিয়ে দেয় তারা। প্রথমে বিড়ি মালিক ও তার পরিবারের সকলের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে বন্ধ করে দেয় দুষ্কৃতীরা। তার পর তাদের ভেতরে রেখে বাড়িতে তন্ন তন্ন করে শুরু হয় তল্লাশি। ভেঙে ফেলা হয় একাধিক আলমারি ও সিন্দুক। লন্ডভন্ড করে দেয় সবকিছু। নগদ সাড়ে সাত লক্ষ টাকা ও বিপুল পরিমাণে সোনা ও রূপার গয়না নিয়ে যায় তারা। তিনি ও তার পরিবার ভাঙচুরে বাধা দিলে তাদের শাসানো হয়। লুঠপাট চালিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় ভুয়ো সিজার লিস্ট ধরিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। যাওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা কিরীটি কুমারের একটি চার চাকা স্করপিও গাড়িটি এবং তার চালককেও সঙ্গে করে নিয়ে যায়।
বেশ কিছুক্ষণ পার হয়ে যাওয়ার পর থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান কিরিটি কুমার। তিনি বুঝতে পারেন ওরা নকল আয়কর আধিকারিক। সেই রাতেই পুলিশ তদন্তে নেমে যায়। রাতে রাঁচির জোনা বাজারে চলে যায় পুলিশ। সেখান থেকে চালককে নামিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে গিয়েছিল দুস্কৃতিরা।
তদন্তে জেলা পুলিশ এসডিপিও ঝালদার নেতৃত্বে বিশাল টিম গড়ে তোলে। সেই টিম ঘটনার ১১ দিনের মাথায় অপরাধের কিনারা করল। সোমবার ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হবে। “তাদের রিমান্ডে নিয়ে লুঠ যাওয়া টাকা গয়না ও গাড়ি উদ্ধারে পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।” বললেন পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Post Comment