দেবীলাল মাহাত, আড়শা :
গাঁয়ে ছিল না কোন দুর্গাপূজা। ফলে পুজোর আনন্দে সামিল হতে পাশের অঞ্চলে অন্য গ্রামে ঠাকুর দেখতে যেতে হতো। এখানেই বিপত্তি। সেই গ্রামের সাথে এ গ্রামের বিবাদ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে দুগ্গা ঠাকুর দেখতে যাওয়াই ছিল মহা ঝক্কির কাজ। অবরুদ্ধ করে দেওয়া হতো রাস্তা। চাষের জমি দিয়ে যে আলপথ, সেই পথে ধান গাছের চারা বেঁধে দেওয়া হতো। তারপরও কেউ ঠাকুর দেখতে এলে শুনতে হতো অপমানজনক কথাবার্তা।
সেই অপমান থেকে বাঁচতে আর পূজা দেখতে না পাবার সেই দুঃখ ঘোচাতে আজ থেকে ১১৪ বছর আগে আড়শা ব্লকের তুম্বাঝালদা গ্রামে শুরু হয়েছিল দুর্গাপূজা। মন্দির তৈরীর জন্য জমি দানে এগিয়ে আসে গ্রামের দেওঘরিয়া পরিবার। সেই জমিতেই ১৩১৭ সালে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মায়ের আরাধনা শুরু হয়। পুজোর আনন্দে মেতে উঠেছিল আট থেকে আশি সকলেই।
ঐতিহ্যের ধারা বহন করে আজও পুজায় সপ্তমী থেকে মহানবমী তিনদিন ধরে পাঁঠা বলি হয়ে থাকে তুম্বাঝালদা বোলতলা সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে। মাঝে মাঝে রীতি মেনে দেওয়া হয় মহিষ বলি। বর্তমানে পুজোর দায়িত্বে রয়েছে দেওঘরিয়া পরিবার। পুজোর দায়িত্বে থাকা দুর্গাদাস দেওঘরিয়া বলেছেন, পুজোয় আগেকার মতো জৌলুস হয়তো নেই, কিন্তু ঐতিহ্যের ধারা বহন করে আজও আমরা মায়ের আরাধনা করে চলেছি নিষ্ঠাভরে। সেখানে কোনও খামতি নেই।
Post Comment