নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া : ৬৬ টি হাতি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পুরুলিয়া ও লাগোয়া ঝাড়খন্ড সীমান্তে। এখন কি আর ছুটি চলে? ফলে পুরুলিয়া বন বিভাগের সমস্ত কর্মচারীদের ছুটি নাকচ পুজোয়। বদলে নজরদারিতে দেওয়া হয়েছে জোর। যে এলাকায় হাতির গতিবিধি পরিলক্ষিত জঙ্গলমহলের সেই সব এলাকায় জন সংখ্যা নেহাত কম নয়। ফলে তাদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বন কর্মীদের ছুটি বাতিল করে তাদেরকে হাতি অধ্যুষিত রেঞ্জগুলিতে মোতায়েন করছে পুরুলিয়া বনবিভাগ। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ফোন নম্বর ৭০০৩৬৩৪১৩০ ও ৮০০১৯৪৫৫৯৭। বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে হাতি উপদ্রুত রেঞ্জগুলিতে কুইক রেসপন্স টিম ও র্যাপিড রেসপন্স টিম রাখবে বনদপ্তর। থাকবে একটি করে ফ্লাইং স্কোয়াড। লোকালয়ে হাতির খবর এলেই তারা পদক্ষেপ নেবে।
পুরুলিয়া বনবিভাগের ডিএফও অঞ্জন গুহ বলেন, ” পুজোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমাদের দায়িত্ব পালনই হচ্ছে আরেকটা উৎসব। দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে আনন্দ মেলে।পাহাড়-জঙ্গল এলাকার মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে ঠাকুর দেখতে পারেন তার আমরা সবরকম ব্যবস্থা করেছি।”
কয়েক বছর ধরেই পুরুলিয়া বনবিভাগ পুজোর মরশুমে হাতির হানা থেকে জনতাকে বাঁচাতে তৎপর। এবার অনেক আটঘাট বেঁধে নেমেছে তারা। রবিবার পর্যন্ত এই জেলা ও লাগোয়া ঝাড়খন্ড সীমান্ত মিলিয়ে যা হিসেব পাওয়া গেছে তাতে ৫১টি হাতি রয়েছে। অন্যদিকে একাধিক শাবক সহ ২২ টি হাতির একটি দল ঝাড়খণ্ডের গোলা রেঞ্জ পেরিয়ে ঝালদা বনাঞ্চলের কলমা বিট এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। যদিও কাল রাতেই হাতির দলটিকে ফের ঝাড়খন্ডে ফেরৎ পাঠানো গেছে, তবুও বিপদ এখনও কাটেনি। বর্তমানে ওই দলটি পুরুলিয়া সীমানা ঘেঁষা সেঁওয়াতি পাহাড়ে রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক হাতি এখনও পর্যন্ত তেমন বড়সড় ক্ষতি না করলেও সবজি এবং আমন ধানের ক্ষয়ক্ষতি করছেই। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠা, বলরামপুর রেঞ্জের পানরা, বড়চাটারমা ও সন্নিহিত ঝাড়খন্ড সীমানায় ১ টি হাতি, বলরামপুর রেঞ্জের কেরোয়া মৌজায় ১ টি হাতি , ঝালদা রেঞ্জের কুদাগাড়া ও সন্নিহিত ঝাড়খন্ড সীমানায় ২২ টি হাতি, বাঘমুন্ডি রেঞ্জের কালিমাটি ও লাগোয়া ঝাড়খন্ড সীমান্তে রয়েছে ২৬ টি হাতি,
অযোধ্যা রেঞ্জ-এর পিটিডিরি মৌজায় ১ টি হাতি, মোট ৫১ টি হাতি রয়েছে। আপাতত ঢাকের তালে কোমর দোলাতে পারছেন না বন দপ্তরের কর্মীরা৷ তারা থাকছেন উৎসবের পাহারাদার হয়ে।
Post Comment