নিজস্ব প্রতিনিধি, কাশিপুর: পরপর দু’বছর জগদ্ধাত্রী পুজো করেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছিল। মা জগদ্ধাত্রীর কৃপায় পঞ্চকোট রাজসভার বৈদান্তিক পণ্ডিত তথা অধ্যাপক হারাধন আচার্য পুত্র লাভ করেছিলেন। তখন ১৮৭১ সাল। সেই সময় থেকেই পুরুলিয়ার কাশীপুরের শিয়ালডাঙ্গায় ধুমধামের সঙ্গে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়ে আসছে। এই পুজোর আরেক বিশেষত্ব এখানে হুগলীর চন্দননগরের মতই ৫ দিন ধরে মা জগদ্ধাত্রী পুজো পান। সপ্তমীতে বারি এনেই শুরু হয় পুজো। তারপর টানা একাদশী পর্যন্ত এই পুজো চলে। দ্বাদশীতে হয় মায়ের বিসর্জন। রবিবার ধুমধাম সহকারে নবমী পুজো শুরু হয়েছে এই শিয়ালডাঙায়। এই পুজোর মাহাত্ম্য সমগ্র কাশিপুর ছাড়িয়ে লাগোয়া পড়শি জেলা বাঁকুড়ার জনপদেও ছড়িয়ে পড়েছে। ইতিহাস বলছে ১৮৭১ সালে পুত্র লাভের জন্য এই পুজো শুরু করেছিলেন পণ্ডিত হারাধন আচার্য। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে এই পুজো হয়ে আসছে। এবার এই পুজো ১৫৪ বছরে পড়ল।
এই পুজোকে ঘিরে কার্যত মিলনমেলার রূপ নেয় কাশীপুরের শিয়ালডাঙ্গা। এই জনপদের জগদ্ধাত্রী আরাধনা যেন দুর্গাপূজা। এমনই আবেগ এখানকার মানুষজনের। তাই মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনায় এই গ্রামের সকল মানুষজন নতুন জামা-কাপড় পরে মায়ের সামনে পুষ্পাঞ্জলি দেন। যেমনটা দেখা যায় দুর্গাপুজোয়। ফলে আনন্দে মেতে ওঠে সমগ্র শিয়ালডাঙ্গা। শাক্ত মতে এই পুজো হয় মায়ের।
আচার্য পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, হারাধন আচার্যের প্রপিতামহ দীনমণী গঙ্গোপাধ্যায় (আচার্য) হুগলির হামাটা থেকে শিয়ালডাঙ্গা গ্রামে আসেন। তখন থেকেই এই পরিবার ভট্টাচার্য পরিবার নামে পরিচিত। দীনমণি আচার্যের অগাধ পান্ডিত্যের কারণে সেই সময় পঞ্চকোট রাজ পরিবারের এক রাজা তাকে আচার্য উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। তখন থেকেই এই পরিবারের পদবী আচার্য। এ পুজোতে একচালার মাতৃ প্রতিমার দু’পাশে দুই সখি জয়াও বিজয়া থাকে। ঋষি মার্কন্ডেয় ও দেবর্ষি নারদও থাকেন। সবার ওপরে থাকেন দুই পরী। সিংহবাহিনী মা জগদ্ধাত্রী এখানে চতুর্ভুজা।
Post Comment