দেবীলাল মাহাতো,আড়শা:
নিজের নাম স্বাক্ষর করতে পারেন না। অক্ষর জ্ঞান-ই নেই। কিন্তু দেশ-বিদেশের খবর শুনতে আজও রেডিওর নব ঘোরান। নব ঘোরান মহালয়ার ভোরে মহিষাসুরমর্দিনী শুনতে। এই কারণেই যে বছর ৪০ আগে খাবারের টাকা বাঁচিয়ে সঞ্চিত অর্থে রেডিও কেনা। সেই রেডিওকে ঘিরেই আজ প্রবীণ নাগরিকদের আসর বসে। মহালয়ার প্রাক্কালে সেই আসরে রেডিও উন্মাদনা আরও তুঙ্গে।
হাতে হাতে স্মার্টফোন, ইউটিউব। তবুও বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে আলেখ্য ও চণ্ডীপাঠ শুনতে মান্ধাতার আমলের রেডিওকেই আঁকড়ে ধরছে আড়শার একের পর এক গ্রাম। এই ব্লকের কাঞ্চনপুর গ্রামের পঞ্চানন মাহালি। অভাবের সংসারে লেখাপড়া শেখার সুযোগ হয়নি। নিজের নাম স্বাক্ষরও করতে পারেন না। কিন্তু দেশ-বিদেশের খবর জানার আগ্রহ ভীষণ। সেই সঙ্গে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে মহালয়া। কিন্তু নতুন রেডিও কেনার সামর্থ্য ছিল না । তাই খাবারের খরচের টাকা বাঁচিয়ে বছর ৪০ আগে কিনেছিলেন পুরাতন রেডিও । সেই রেডিওকে এখনও হাতছাড়া করেননি তিনি। মহালয়ার আগে রেডিও যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেই জন্য আগেভাগেই দোকান নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। রেডিও ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন আড়শা ব্লকের গৌরাদাগ গ্রামের সীতারাম মাহাতও। গ্রামের মাঝেই তার মুদিখানার দোকান । ১৯৮৫ সাল থেকে ওই দোকান খোলার সময় তার সকাল থেকে সন্ধ্যা অবসরের মাধ্যম সেই রেডিও। ওই রেডিও ছাড়া তার এক মুহুর্ত চলে না। মহালয়ার দিন তো কথায় নেই! আজও রেডিও শোনার নেশা ছাড়তে পারেননি তিনি। তার কথায়, “১৯৮৫ সাল থেকে দোকান খোলার পর আমার সর্বক্ষণের সাথি এই রেডিও।”
Post Comment