নিজস্ব প্রতিনিধি, অযোধ্যা:
গ্রামের প্রত্যন্ত ক্ষেতে পস্তু চাষ। সেখান থেকে আফিম সংগ্রহ করে জড়ো করা হচ্ছে রিসর্টে। আর সেখান থেকে আফিম ভর্তি ব্যাগ চলে যাচ্ছে ঝাড়খণ্ড। কী ওয়েব সিরিজের প্লট? না মশাই এ হলো ঘোর বাস্তব। আফিম লেনদেন চলছে, গোপন সূত্রে এমন খবর পেয়ে হানা দিল এসটিএফ।
অযোধ্যা পাহাড়ের ইকো রিসর্টে। স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের হাতে ধরা পড়ল এগারশো গ্রাম আফিম, নগদ সাড়ে চার লাখ টাকা,তিনটি মোটর বাইক সহ ঝাড়খণ্ডের ৬ যুবক । ঘটনা পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন মামুডি গ্রামে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃতরা হল ঝাড়খণ্ডের রাঁচি জেলার বুন্ডু থানার গীতিডি গ্রামের বাসিন্দা যোগান মুন্ডা, বুধুরাম মুন্ডা, বুধু মুন্ডা ও লখিদাস মুন্ডা। রাঁচিরই আনগোড়া থানার পূরনাডি ও কাঁটাটোলা এলাকার বাসিন্দা যথাক্রমে সুভাষ মুন্ডা ও অজিত মুন্ডা।
আফিম কারবারে কয়েক বছর ধরে পড়শি রাজ্যে ঝাড়খণ্ডের নেক্সাসে জড়িয়ে পড়েছে পুরুলিয়া। ফলে পাহাড়, ঝোপ – ঝাড় এলাকায় স্থানীয় চাষিদের সামান্য টাকার বিনিময়ে পস্তু চাষ করিয়ে সেখান থেকে নিষিদ্ধ আফিম সংগ্রহ করেছে ঝাড়খণ্ডের মাফিয়ারা। যৌথ অভিযান চালিয়ে পুরুলিয়ায় কয়েকটি জায়গায় নষ্টও করা হয়েছে পস্তু চাষ। খবর হয়। এর পরেই গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স।
শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে, ঝাড়খণ্ড থেকে ৩ টি মোটর বাইক নিয়ে ছ জন যুবক আফিম সংগ্রহের জন্য অযোধ্যা পাহাড়ের মামুডি গ্রামে এসেছে। এই খবরের ভিত্তিতে এস টি এফ এর দুর্গাপুর ইউনিট থেকে সাদা পোশাকে পুলিশের একটি দল অযোধ্যা পাহাড়ে আসে। সেখানে তারা প্রাথমিক অনুসন্ধান করে জানতে পারে ওইদিন বিভিন্ন গ্রামের এজেন্টদের মারফত তারা আফিম সংগ্রহ করেছে। পরের দিন ভোরে আরো কয়েকটি গ্রাম থেকে ওই মাদক সংগ্রহ করে তারা ঝাড়খন্ডে ফিরে যাবে। তবে ওইদিন রাতে ৬ জনের ওই আন্তঃরাজ্য মাদক চক্রের সদস্যরা মামুডি গ্রামের জনবসতি থেকে খানিকটা দূরে থাকা একটি রিসর্টে উঠেছে। এই খবরের সত্যতা যাচাই করতে ভোর রাতে ওই রিসর্টে পৌঁছায় পুলিশের বিশেষ দল। অতিথিদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পারেন ওই সময় অভিযুক্তরা সে সময় টেন্টে রয়েছে। এর পরেই ওই তাম্বুটি ঘিরে তাদের ঘুম থেকে তোলা হয়। তার পর ভেতরে তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগের ভেতরে প্লাস্টিকের মধ্যে থাকে এগারশো গ্রামের কিছু বেশি আফিম উদ্ধার হয়। অন্য একটি ব্যাগ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা উদ্ধার হয়। পরে এই মর্মে এস টি এফ এর এক সাব ইন্সপেক্টর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোটশিলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে পুলিশ মাদক আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে তাদের চার দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।
Post Comment