নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :
জিনাতের আশিকের পায়ে পায়ে খুলে গেল তিন দশক আগের ৭০০ কিমি ব্যাঘ্র করিডর! পালামৌ টাইগার রিজার্ভের ট্র্যাপ ক্যামেরায় যেমন ধরা পড়েছে সে, তেমনই ধরা পড়েছে ছত্তিশগড়ের বলরামপুর অর্থাৎ গুরু- ঘাসিদাস ন্যাশনাল পার্ক এলাকাতে ট্র্যাপ ক্যামেরায়। আর সেটাও পালামৌয়ে ক্যামেরা বন্দি হওয়ার প্রায় মাস দেড়েক আগে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে পালামৌ থেকে দক্ষিণবঙ্গে এলেও ছত্তিশগড়ও ঘুরে এসেছে জিনাতের বানজারা আশিক। মধ্যপ্রদেশের বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভ থেকে পালামৌ হয়ে একেবারে বাংলা প্রায় ৭০০ কিলোমিটার, তিন দশক আগেও এই দীর্ঘ পথ ছিলো ব্যাঘ্র করিডর। সেই করিডর নতুন করে খুলে গেল বানজারা বাঘের পায়ে পায়ে। এমনটাই বলছেন, পালামৌ টাইগার রিজার্ভের সহ অধিকর্তা প্রজেসকান্ত জেনা। তিনি জানান, ” এই ঘটনায় দীর্ঘদিন পর বাঘের পুরনো করিডর নতুন ভাবে খুলে গেল। এই বিস্তীর্ণ করিডরে আমরা নজরদারি রাখছি।অস্থায়ী শিবিরের পাশাপাশি এই করিডর জুড়ে বিপুলসংখ্যক ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো হবে। “

ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়ার সূত্রে প্রথমে জিনাতের আশিককে পালামৌয়ের আদি বাসিন্দা বলে মনে করা হলেও এই নতুন ছবি সামনে আসায় তাকে কোন এলাকার বাঘ বলে চিহ্নিত করা হবে তা এখনও স্থির করা যায়নি এনটিসিএ ( ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি)-র তরফে। কারণ সর্বশেষ ২০২১-র ব্যাঘ্র সুমারিতে জিনাত- সঙ্গীর যে কোন রেকর্ড-ই ছিল না।
ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞদের কথায় মধ্যপ্রদেশে ব্যাপক হারে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে। সেখান থেকে বাঘ চলে আসছে ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ডে। সাধারণভাবে পাঁচ থেকে দশ কিমি ব্যাসার্ধ জুড়েই একটি বাঘ চলা ফেরা করে। কিন্তু জিনাতের বানজারা আশিকের যাতায়াতে ৭০০ কিমি ব্যাঘ্র করিডর খুলে যাওয়ায় খুশি তাঁরা।
বাংলা এই বাঘকে ‘ দক্ষিণবঙ্গের গর্ব’ বলে প্রচার করে তাকে বন্দি করার অভিযান বন্ধ রেখেছে।
রাজ্যের মুখ্য বনপাল ( পশ্চিম চক্র) সিঙ্গরম কুলানডাইভেল বলেন, ” ওই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার মানুষ দেখলেও কোন ক্ষতি করছে না। তাই তার আচরণ দেখে আমরা বাঘ বন্দি অভিযান বন্ধ রেখেছি। তবে যদি তাকে বন্দি করতেই হয় তাহলে আমরা তার গলায় রেডিও কলার পরাবো। ” ঝাড়খন্ড
বনবিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিনাতের বানজারা আশিক বর্তমানে দলমা রেঞ্জ এলাকাতেই রয়েছে। আজ তাকে দেখা গেছে দলমা পশ্চিম রেঞ্জের তনকচাতে। ওই জঙ্গলে একটা বাছুর মেরে খেয়েছে প্রেমিক প্রবর। জখম করেছে দুটি গবাদি পশুকে। সেগুলোর গায়ে স্পষ্ট বাঘের আঁচড়ের দাগ। কোনমতে বাঘের আক্রমণ এড়িয়ে পালায় তারা।
Post Comment