insta logo
Loading ...
×

অযোধ্যায় তুলকালাম, ঘেরাও ‘বহিরাগত’রা, তুমুল বিক্ষোভ

অযোধ্যায় তুলকালাম, ঘেরাও ‘বহিরাগত’রা, তুমুল বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঘমুন্ডি:

অভিযোগ উঠেছিল আগেই।অযোধ্যা পাহাড়ে গিয়ে নাকি অশান্তি পাকাচ্ছেন ‘বহিরাগত’ মানুষজন। এবার অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটি এই অভিযোগ তুলে ঘেরাও করল ‘বহিরাগত’দের। পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের জামঘুটু গ্রামের কাছে শুক্রবার বিকালে ঘটে তুলকালাম ঘটনা।
আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির অভিযোগ, পাহাড়ের মানুষজনের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে ‘ওরা’। সহজ-সরল আদিবাসীদের বিভ্রান্ত করছে। এমনকি পাট্টা দেওয়ার নাম করে ফর্ম ফিল আপ করিয়ে মানুষজনের কাছে টাকা নেওয়া চলছে। তাদের দাবি, এমন অনৈতিক কাজ বরদাস্ত করা হবে না। পাহাড়ের উন্নয়ন যদি করতে হয়, পাহাড়ের মানুষজনই করবেন। গ্রামসভার সীমানা নির্ধারণ করতে আদিবাসীদের সহায়তা করতে এসেছেন। এই দাবি এদিন ঘেরাও হওয়া প্রকৃতি বাঁচাও আদিবাসী বাঁচাও মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের।

অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি বলিবাস মুর্মুর অভিযোগ, “এই সংগঠনের আড়ালে কিছু বহিরাগত উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছেন। এই পাহাড়ে পুলিশের নাইট ম্যারাথন নিয়ে তারাই আপত্তি তুলেছিলেন। সাপারমবেড়া গ্রামে একটি স্কুলের কাজ নিয়ে বাধা দিয়েছিলেন। ডিএফও সাহেবকে ঘেরাও করা হয়েছিল। ওই কমিটি জমির মাপজোক করে পাহাড়ের মানুষকে পাট্টা দেওয়া হবে বলে ৫০০-১০০০ টাকা করে নিচ্ছে। কিন্তু যারা ওই টাকা দিয়েছেন তারা কোন পাট্টা পাননি। আর তারা পাট্টা দেওয়ার কে? পাট্টা তো দেবে সরকার। প্রায় ১৮০০ জনের কাছে টাকা নেওয়া হয়েছ। হিসেব দিতে পারেনি ওরা। তাদের অসাধু উদ্দেশ্য ভেস্তে দিতে আমরা বাধ্য হয়ে তাদের ঘেরাও করি।”

বিক্ষোভে আটকে পড়া ‘প্রকৃতি বাঁচাও আদিবাসী বাঁচাও মঞ্চে’র সভাপতি নকুল বাস্কে স্বীকার করেছেন, “জমির মাপজোক করে দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়া হয়েছিল। আলোচনা করেই নেওয়া হয়। গ্রামসভার সীমানা নির্ধারণ করতে গেলেও বাধা আসে। ফলে আর সেই কাজ করা যায়নি। ওই কমিটি আমাদের সঙ্গে সংঘাতে যেতে চাইছে। ওই সীমানা নির্ধারণ করার জন্য আমরা সব দফতরে জানিয়েছিলাম।”
তবে বাঘমুন্ডি ব্লক প্রশাসন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, গ্রামসভা বিষয়টি এখানে কোন ভাবেই বৈধ নয়! তবে ওই বিক্ষোভে ঘেরাও হয়ে থাকা পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি থানা এলাকার বাসিন্দা তথা বনাধিকার আন্দোলন কর্মী ঝর্ণা আচার্যর দাবি, ” বনাধিকার আইনে গ্রাম সভার উল্লেখ রয়েছে। মানুষজনের অধিকার পাইয়ে দিতেই এসেছিলাম। কিন্তু বাধা আসে। পুলিশ এসে আমাদেরকে সরিয়ে দেয়।”

দুই পক্ষের বাদুনাবাদে উত্তেজনা ছড়ালে অযোধ্যা ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ‘বহিরাগত’-দের উদ্ধার করতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে।
বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশ ওই ঝর্ণা দেবীর কাছে জানতে চেয়েছিল, কার অনুমতি নিয়ে তারা এই গ্রাম সভার সীমানা নির্ধারণ করতে এসেছেন?
বনাধিকার আন্দোলন নিয়ে কাজ করা ওই কর্মী ঝর্ণা আচার্য্য, ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির গোহালবেড়ার আমিন রামেশ্বর সিং, হুগলির চুঁচুড়ার প্রসেনজিৎ সাহা-রা কোন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাহাড়ের আদিবাসী মানুষজনের কাছ থেকে আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি। উন্নয়নের কাজে কেউ যদি কোন বাধা দেয় সে বিষয়ে একেবারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি আমরা। আমরা পাহাড়বাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।”

Post Comment