সুজয় দত্ত, পুরুলিয়া :
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে দেওয়া হোক মাসে মাসে ২ হাজার টাকা। স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই প্রস্তাব দিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। নিজের প্যাডে নবান্নের ঠিকানায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া চিঠিতে এই প্রস্তাব জানিয়েছেন সাংসদ।
চিঠিতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে রাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সরাসরি সমালোচনা করে সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো লিখেছেন, “আপনার সরকারের দাবি যে এই প্রকল্পটি মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য, কিন্তু বাস্তবে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার সুরাহা করার বদলে এই প্রকল্প এখন ভোট সংগ্রহের হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।”
বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে অনুদান বাড়িয়ে ২ হাজার টাকার প্রস্তাব দেওয়া চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড এবং বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের উদাহরণ। তিনি বলেন, “বিজেপি-শাসিত মহারাষ্ট্রে রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী মাজি লেড়কি বেহেন যোজনায় মহিলাদের প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা দিচ্ছে।” একইভাবে প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ড রাজ্যের উদাহরণ এনে সাংসদ বলেন, ” ঝাড়খণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মাইয়াঁ সম্মান যোজনায় নগদ সহায়তা প্রতি মাসে বাড়িয়ে আড়াই হাজার টাকা করা হয়েছে।” এই উদাহরণগুলি সামনে এনে সাংসদের প্রস্তাব, “অন্তত মায়েদের সম্মানের খাতিরে ২ হাজার টাকা দিন।”
এই চিঠির বিষয়ে রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “ওরা আগে বলুক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লক্ষ্মীর ভান্ডার চালু করার আগে ওরা কেন কোথাও কিছু করেননি? নকল করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে। তার আবার বড় বড় কথা। আগে কেন্দ্রকে বলুন বাংলার বকেয়া টাকা দিতে।”
২০২১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করেছে। প্রথমে সাধারণ সম্প্রদায়ের মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা ও তফসিলি জাতি এবং উপজাতির মহিলাদের মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। ২০২৪ থেকে সাধারণ সম্প্রদায়ের মহিলাদের জন্য অনুদান বেড়ে হয় ১ হাজার টাকা। তফসিলি জাতি, উপজাতি মহিলাদের অনুদান বেড়ে হয় ১২০০ টাকা।
সাংসদ চিঠিতে লিখেছেন, “দেশের মধ্যে পশ্চিম বাংলায় মুদ্রাস্ফীতি সবচেয়ে বেশি। জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম আকাশ ছোঁয়া। এই মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে মাসিক ১ হাজার, ১২oo টাকা যথেষ্ট নয়। এই প্রকল্পে অনুদান বৃদ্ধি হলে তবে লক্ষ্মীর ভান্ডারের প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধন হবে। “
স্বয়ং বিজেপি সাংসদ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে অনুদান বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করায় কার্যত পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বাংলায় এই প্রকল্পের গুরুত্ব কতটা, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Post Comment