দেবীলাল মাহাত, আড়শা :
“সব খেলার সেরা , বাঙালির তুমি ফুটবল”। শহর ছাড়িয়ে, গ্রামেও বেশ জনপ্রিয় ফুটবল খেলা। আর ফুটবল খেলার অন্যতম অঙ্গ ধারাবিবরণী। দর্শকদের চাহিদা মতো গ্রামীণ ফুটবলেও শুরু হয়েছে ধারাভাষ্য। বর্তমানে ধারাভাষ্যকার হিসাবে জেলার মানচিত্রে পরিচিতি মুখ কাফিল আনসারী। ফুটবল মাঠে কি হচ্ছে তা শব্দের মাধ্যমে ফুটিয়ে , জেলার ফুটবলপ্রেমী মানুষদের আনন্দ দিয়ে চলেছেন তিনি । যা এক প্রকার বিনোদনের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে।
পুরুলিয়া মফস্বল থানার কোলবাঁধ গ্রামের বাসিন্দা কাফিল আনসারি।ছোট থেকেই টান ফুটবলের প্রতি। জেলার যে কোনো প্রান্তে বড় বাজেটের খেলা হলেই , ধারাভাষ্যকার হিসাবে ডাক পড়ে কাফিল আনসারীর। যাকে সকলেই চেনেন “কপিলদা” বলে। শব্দ চয়ন, স্পষ্ট উচ্চারণ , মাঠের খেলাকে ফুটবল প্রেমিকদের কাছে দিনের পর দিন পৌঁছে দেন মাইক্রোফোন হাতে। ফুটবল খেলাকে করে তোলেন আরও আকর্ষণীয়।
বাংলাতে স্নাতক করে ,কাফিল আনসারী বাড়িতে টিউশন পড়াতেন।সময়টা ২০১৩ সাল। ফি বছর মনসা পুজা উপলক্ষ্যে গ্রামের মাঠে ফুটবল টুর্নামেন্ট হয়। মাঠে গিয়েছিলেন দর্শক হিসাবে খেলা দেখতে। ঘটনাক্রমে কমিটির সদস্যদের অনুমতি নিয়ে ভালোলাগা থেকে ধরে নেন মাইক্রোফোন।সেই থেকে শুরু পথচলা। আর ফিরে তাকাতে হয়নি। পুরুলিয়া থেকে বাঁকুড়া, বোকারো থেকে ধানবাদ, বীরভূম থেকে হুগলি , এমনকি ওড়িশাতেও ধারাভাষ্যকার হিসেবে উজ্জ্বল নাম কাফিল আনসারী। বছরের ৬-৭ মাস চলে ফুটবল, ক্রিকেট , ভলিবলে ধারাভাষ্য হিসাবে কাজ করা ।কাফিল আনসারি জানান ধারাভাষ্যের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। মানুষ যে ভাষা শুনতে অভ্যস্ত ,যে ভাষা বোঝে ।সেই ভাবে,সেই ভাষাতেই ধারা বিবরনী বলার চেষ্টা করি।
মা উমার আগমনে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ফুটবল খেলা হয়। খেলা চলছে আড়শা ব্লকের রাঙামাটি ফুটবল মাঠেও। ৩ লক্ষ টাকার ফুটবল ধামাকায় দর্শক ঠাসা মাঠে সেখানেই মাইক্রোফোন হাতে দেখা গেলো কাফিল আনসারিকে। স্পষ্ট শব্দ চয়নের মাধ্যমে ফুটবল খেলাকে আরও জীবন্ত করে তুলছেন। হাজার হাজার মানুষের চোখ ও কান তার দিকে। দেখতে দেখতে খেলা চলাকালীন হয়ে গেল ‘কর্নার’। শোনা গেল তার ভাইরাল উক্তি -“আমি বলবো না, সময় বলবে ” ।আর বলতে বলতেই গোল। হাততালিতে ফেটে পড়লো গোটা মাঠ।
Post Comment