নিজস্ব প্রতিনিধি, জয়পুর:
দু’দিনব্যাপী জাতীয় সেমিনারে মানভূমকে নতুন করে চেনালো জয়পুর। বৃহস্পতিবার বিক্রমজিৎ গোস্বামী মেমোরিয়াল কলেজে শুরু হল ‘বিশ্বায়নের দুনিয়ায় মানভূমের অন্বেষণ’ শীর্ষক আলোচনাসভা। আয়োজন করেছে কলেজের বাংলা বিভাগ। সহযোগিতায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ। দুই দিন ধরে ইতিহাস, ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সামাজ–অর্থনীতির নানা প্রেক্ষাপট উঠে আসবে এই মঞ্চে।
উপস্থিত ছিলেন সিধো কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ পবিত্র কুমার চক্রবর্তী, সাহিত্যিক রামকুমার মুখোপাধ্যায়, কবি অংশুমান কর, স্কুল সার্ভিস কমিশনের পশ্চিমাঞ্চল চেয়ারপার্সন ডক্টর সাধনা খাওয়াস-সহ বহু গবেষক ও বিশিষ্ট বক্তা।
উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে স্মরণ করালেন মানভূম বিভাজনের যন্ত্রণা। তুললেন উপেক্ষিত এক ইতিহাসের কথা—“বাংলা ভাষার জন্য বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারি, শিলচরের ১৯ মে যত সম্মান পায়, মানভূমের পয়লা নভেম্বর ততটাই গুরুত্ব পাওয়ার কথা ছিল,” আক্ষেপ তাঁর।
অন্যদিকে কবি অংশুমান করের নজর বর্তমানের দিকে। বিশ্বায়নের ঢেউ কীভাবে পুরুলিয়ার সমাজ-বাস্তবতাকে বদলে দিচ্ছে, সে কথাই তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “ ভাষা আন্দোলনের ফলে পুরুলিয়ার জন্ম। যতটা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাভাষা, ততটাই গুরুত্ব পাক সাঁওতালি ভাষা, কুড়মালি ভাষা। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য নয়, আজ প্রয়োজন বৈচিত্র্যের নিজস্ব ঐক্যকে স্বীকৃতি দেওয়া।”
সেমিনারের আহ্বায়ক ডঃ স্নিগ্নদীপ চক্রবর্তী জানান, ‘‘বিভাজনের আগে মানভূম ছিল এক বিশাল ভূখণ্ড। বিভাজনের পরে পুরুলিয়া ও ঝাড়খণ্ডের মানভূমবাসীর জীবনযাপন কীভাবে বদলেছে, সেই আলোচনাই এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য।’’
আয়োজকদের কথায়, এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতে মানভূম গবেষণা ও সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। “মানভূমকে জানার পথ আরও প্রসারিত হোক—এই আমাদের লক্ষ্য,” জানালেন তাঁরা।










Post Comment