সুজয় দত্ত, জয়পুর :
যৌবনে মনের জোরে যে কাজ করা খুবই সহজ, বৃদ্ধকালে বয়েসের ভারে তা অনেকটাই কঠিন। জীবনের শেষ লগ্নে পৌঁছে যখন বৃদ্ধাবস্থা উপস্থিত হয় তখনই প্রয়োজন হয় ভরসার। কিন্তু তখন যদি কেউ পাশে না থাকে? পরম স্নেহে বড় করে তোলা সন্তানদের কাছেও যদি বাবা-মা বোঝা হয়ে যায়, তখন? এই দুশ্চিন্তাই যেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের কুরে কুরে খায়। কিন্তু আর চিন্তা নেই। এবার বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের পাশে থাকবে পুরুলিয়ার গড়জয়পুরে স্থিত পুরুলিয়া জেলা সেবা মন্দির বৃদ্ধাশ্রম স্থাপিত করল জয়পুরের দেশি ক্যাম্প এলাকায়। ফিতে কেটে বৃদ্ধাশ্রমের উদ্বোধন করে জয়পুরের বিশেষ ভাবে সক্ষম দৃষ্টিহীন যুবক আশিস দত্ত।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মেন্টর জয় ব্যানার্জি, সমাজসেবী রথীন্দ্রনাথ মাহাতো, সুষেণ মাঝি, রাজাবাবু আনসারি, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নীলাঞ্জনা পট্টনায়ক চ্যাটার্জি, জেলা পরিষদের সদস্য অর্জুন মাহাতো, জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঋষিপদ গোপ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ দীপঙ্কর সিংহ দেও প্রমুখ।
নিজেদের বক্তব্যে পুরুলিয়া সেবা মন্দিরের কর্ণধার দিব্যজ্যোতি সিংহ দেওয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন, পুরুলিয়া জেলা পরিষদের মেন্টর জয় ব্যানার্জি, সমাজসেবী সুষেণ মাঝি, রাজাবাবু আনসারি, জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ঋষিপদ গোপ, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নীলাঞ্জনা পট্টনায়ক চ্যাটার্জিরা। তাঁরা বলেন, শেষ বয়সে শরীর যখন অশক্ত হয়ে যায়, মন যখন দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন যাদের পাশে কেউ থাকছে না, তাদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে অত্যন্ত পুণ্যের কাজ করলেন দিব্যজ্যোতি। অনুষ্ঠানের সুচারু সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী দিব্যেন্দু শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়।

দিব্যজ্যোতি সিংহ দেও বলেন,”আপাতত ১০ জন আবাসিককে নিয়ে শুরু হলো আমাদের বৃদ্ধাশ্রম। এখানে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের কেউ সন্তানহীন তো কেউ পরিবার পরিজনহীন। আবার এমনও মানুষ রয়েছেন যাঁর ছেলে বউমা দুমুঠো খেতে দেয় না। আমি যতদিন বাঁচব, এই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের থাকা, খাওয়া, পরা, চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করব।”
Post Comment