নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝালদা:
প্রেমিক আর প্রেমিকার ‘পথের কাঁটা ‘ হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রেমিকার স্বামী। স্বামীকে খুন করিয়েছিল স্ত্রী। প্রেমিককে দিয়ে। প্রমাণ লোপাট করতে মৃতের শরীরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনা পুরুলিয়ার ঝালদা থানার ব্রজপুরে। তদন্তে নেমে মৃতের স্ত্রী ও তার প্রেমিককে গ্রেফতার করে এমন কথাই জানতে পারে পুলিশ। ধৃতদের নাম বিবেকানন্দ পাণ্ডে ওরফে মহেশ এবং মঙ্গলা মুড়া। উভয়েরই বাড়ি ঝালদার ব্রজপুর গ্রামে।
ঠিক যেন থ্রিলার সিনেমার চিত্রনাট্য।
শনিবার সকালে ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা ঝালদার ব্রজপুর গ্রামের অদূরে মাঠের মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যাক্তির আধপোড়া মৃতদেহ পড়ে আছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। দেহটি উদ্ধার করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ বুঝতে পারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। পরে প্রমাণ লোপাট করতে দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।স্থানীয় এক ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে খুন ও প্রমাণ লোপাটের মামলা রুজু করে ঝালদা থানার পুলিশ তদন্তে নামে। মৃতের পরিচয় পায় তারা। পুলিশ জানিয়েছে মৃতের নাম সুকরাম সিং মুড়া (৩০)। বাড়ি ব্রজপুর গ্রামেই। স্বামী মৃত অথচ শোকের ছায়া স্ত্রীর মুখে। এতেই পুলিশের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদ করে মেলে সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন,” বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুনের ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।”
বছর আট আগে সুকরামের সঙ্গে মঙ্গলার বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের একটি সন্তানও আছে। কিন্তু প্রেমের ফাঁদ পাতা ত্রিভুবনে। প্রতিবেশী বিবেকানন্দের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে মঙ্গলা। স্বামী অজান্তে তাদের মেলামেশা চলত। গোপন কথাটি জানতে পারে স্বামী। শুরু হয় ঝামেলা। স্ত্রীর উপর নজরদারি চালাতে থাকে সুখরাম। এরপরেই ‘পথের কাঁটা’ সরাতে দুজন মিলে খুনের ছক করে। জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে শুক্রবার রাতে সুখরামকে গ্রামের অদূরে মাঠের কাছে ডেকে নিয়ে যায় বিবেকানন্দ।সেখানেই তাকে কুপিয়ে খুন করা হয়। পরে প্রমাণ লোপাট করতে দেহে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বুধবার ধৃতদের পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে তাদের ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়।
Post Comment