insta logo
Loading ...
×

হারিয়ে গেল খেলা, মোবাইল কাড়লো শৈশব

হারিয়ে গেল খেলা, মোবাইল কাড়লো শৈশব

অমরেশ দত্ত, মানবাজার:

“কোথায় রে তোর প্রাণ উচাটন ডাংগুলিটির তীর/
কোথায় বসে তুই হারালি মাঠের হাজার ভিড়/
চু কিত কিত কেউ বলে না, কাটে না আর ঘর/
ঘর বন্দী মোবাইলে সবাই তোর আজ পর/
উড়বে কোথায় ঘুড়ি আজি, সুতোও গেছে ছিঁড়ে/
নিজেই লুকাস ঘরের কোণে আলগা থেকে ভিড়ে/
হা ডু ডু ডু খেলতে জানিস, হয় আজ আকাশ দেখা/
নিজের মাঝে নিজেই লোকাস নিজেই একা একা”

কোথায় গেল সেই গ্রামীণ খেলাধুলোর চর্চা? খেলার চর্চার অভাব শিশুদের ব্যস্ত রাখছে মোবাইলে। তাদের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে একাকীত্ব। বাড়ছে নিঃসঙ্গতা বোধ!

এ এক দুঃসহ পরিস্থিতি।
এক সময়ে, সারা বাংলা জুড়ে নানা বিচিত্র খেলা প্রচলিত ছিল। এখন চর্চার অভাবে, অনেক খেলার নামও পর্যন্ত গ্রামের মানুষ ভুলতে বসেছেন। কিন্তু এমন দিনও ছিল, যখন পড়াশোনার পাশাপাশি, অবসর সময়ে শিশু থেকে যুবকরা এই খেলাগুলি নিয়ে মেতে থাকত। গ্রামের পরিবেশে নব্বই দশক পর্যন্ত বড় হয়ে উঠেছে এমন ছেলেমেয়েরা কিত-কিত, মার্বেল, লাটিম খেলেনি, এমন দৃষ্টান্ত বিরল। স্কুলে যাওয়া ছেলেদের কারও কারও হাফপ্যান্টের এক পকেটে থাকত লাট্টু-দড়ি, অন্য পকেটে মার্বেল। স্কুল ছুটির পরে, মনের আনন্দে সেই লাট্টু ঘোরাতে ঘোরাতে বাড়ি ফিরত সেই সময়ের ছোটরা। কিন্তু এখনকার শিশুরা এই সব খেলাগুলির বিষয়ে জানেই না। খেলার জায়গায় মোবাইলে ব্যস্ত।বাস্তব নয়, ভার্চুয়াল দুনিয়ার খেলা তাদের সঙ্গী।

এ সময়ে শহরের শিশুরা তো বটেই, গ্রামগঞ্জের অধিকাংশ ছেলেমেয়ে ইন্টারনেট ও মোবাইল গেমে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই ভার্চুয়াল জগত আজকের শিশুদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে একা থাকার প্রবণতা। একাই সবকিছু ভোগ করার প্রবণতা। ভবিষ্যতে যা থেকে জন্ম নিচ্ছে একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা বোধ। আর বাড়িতে বসে মোবাইলে মেতে থাকা শিশুদের সে ভাবে শরীরচর্চাও করা হয় না। শিশুদের মানসিক বিকাশও বাধা পাচ্ছে। তাই সময় এসেছে, হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলিকে নিয়ে নতুন করে ভাবার। 
মানবাজারের ব্যবসায়ী সঞ্জয় দত্ত বলছেন, “আমরা যে সব খেলা ছোটোবেলায় খেলতাম যেমন ডাংগুলি, মার্বেল, ঘুড়ি ওড়ানো সেগুলো দেখতে দেখতে লুপ্ত হয়ে গেল। আর এখন শিশুদের সর্বক্ষণের সঙ্গী মোবাইল। বড়ো বিপজ্জনক জায়গায় চলে যাচ্ছে সমাজ। তাদের চিন্তাভাবনা, শারীরিক সক্ষমতা সবকিছু আবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। চোখের ক্ষতি তো আছেই। অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। “

Post Comment