নিজস্ব প্রতিনিধি, নিতুড়িয়া :
তাঁর স্ত্রীকে কেন তাড়াতাড়ি সভাপতি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্ন তুলে কলেজে ঢুকে
অধ্যাপকদেরকে গাড়ি চাপা দেওয়ার হুমকি প্রাক্তন বিধায়কের। চাঞ্চল্যকর এমন অভিযোগ উঠল পুরুলিয়া জেলার কয়লাঞ্চল নিতুড়িয়ায়। অভিযোগের কেন্দ্রে রঘুনাথপুরের প্রাক্তন বিধায়ক তথা এলাকার ডাকসাইটে তৃণমূল নেতা পূর্ণচন্দ্র বাউরি।
রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর দিয়েছে নির্দেশ। তারপরেও নাম বিভ্রাটের জেরে পূর্ণচন্দ্র বাবুর স্ত্রীকে সরবড়ি পঞ্চকোট মহাবিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিচ্ছে না। আর সহ্য হল না প্রাক্তন বিধায়কের! রাগে ফেটে পড়লেন তিনি। একেবারে কলেজে ঢুকে শুধু অধ্যক্ষই নয়, একাধিক অধ্যাপক সহ শিক্ষা কর্মীদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরবড়ি মোড়ে তাঁদের নাকি গাড়ি চাপা দেবেন বলে হুমকি দিলেন পূর্ণচন্দ্র বাউরি। হুমকির জেরে দস্তুরমত আতঙ্কে অধ্যাপকরা। নিরাপত্তার অভাব বোধ করে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে । অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রাক্তন বিধায়ক। তিনি বলেন, ” আমি কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য। কলেজে নানা বেনিয়ম ও সমস্যা নিয়ে কলেজেরই কিছু শিক্ষক ও পড়ুয়া আমাকে চিঠি দিয়েছিলেন।বলেছিলেন বিষয়টি দেখতে। তাই পরিচালন সমিতির সদস্য হিসাবে মঙ্গলবার কলেজে গিয়েছিলাম। ” প্রাক্তন বিধায়কের অভিযোগ, কলেজে নানা সমস্যা চলছে। বেতন পাননি চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত কয়েকজন । কলেজের কয়েকজন শিক্ষক সময়ে কলেজে আসেন না। প্রায়ই অনুপস্থিত থাকেন। দীর্ঘ ৬ মাস ডাকা হয়নি কলেজের পরিচালন সমিতির সভা। এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার করতে মঙ্গলবার কলেজে যান। বলছেন বিধায়ক। তিনি আসবেন এ কথা অধ্যক্ষকে জানানো হয়েছিলো। কিন্তু অধ্যক্ষ আসেননি।
কলেজের অধ্যক্ষ সপ্তর্ষি চক্রবর্তীর কথায়, “প্রাক্তন বিধায়ক কলেজে এসে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন। সরবড়ি মোড়ে আমাদের গাড়ি চাপা দেওয়ার কথা বলেছেন। আমরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। পুলিশ সুপারকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছি। যেভাবে সন্তোষী দত্তকে নিয়োগ করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে তাতেই আমি অসুস্থ হয়ে কলেজে যেতে পারিনি। “
প্রাক্তন বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরির স্ত্রী সন্তোষী দত্ত। তিনি পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সদস্যও। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দপ্তর কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে সম্প্রতি একটি চিঠি পাঠিয়ে ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসাবে রঘুনাথপুর কলেজের টিআইসি শ্রীনিবাস নন্দীর বদলে সন্তোষী দত্তকে নিয়োগ করতে বলে। চিঠিতে সন্তোষী দত্তর নামের সঙ্গে রয়েছে কলেজের ঠিকানা। ঝামেলা ঠিক এখানেই। পঞ্চকোট মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সন্তোষী দত্ত নামে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আরও একাধিক জন রয়েছেন। সেই কারণেই উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের কাছে জানতে চাওয়া হয় কোন সন্তোষী দত্তকে পরিচালন সমিতির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ করা হবে? এক পক্ষ কেটে গেলেও আসেনি উত্তর। ফলে সভাপতি নিয়োগও হয়নি। বিধায়কের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় এলাকা তোলপাড়। পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখছে তারা।
Post Comment