নিজস্ব প্রতিনিধি, কেন্দা: মোবাইল কেড়ে নেয় ছেলে ও মায়ের জীবন। পরপর এমন দুই মৃত্যুতে শোকে আচ্ছন্ন কেন্দার ওই পরিবার। তাই সেই পরিবারের মানসিক অবস্থা যাতে স্বাভাবিক জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা যায়। সেই সঙ্গে মর্মান্তিক ওই ঘটনার খোঁজখবর নিতে কেন্দার ওই পরিবারের কাছে যায় শিশু সুরক্ষা কমিটি। বুধবার দুপুরে সমাজ কল্যাণ দপ্তরের আওতায় কাজ করা ওই কমিটির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল কেন্দার হরিহরপুর গ্রামের নীলকমল প্রামাণিকের বাড়িতে যায়। ওই দলের সঙ্গে ছিলেন কেন্দা থানার ওসি দীপঙ্কর বিশ্বাস ও পুঞ্চার বিডিও-র প্রতিনিধি। ওই দল ওই বাড়িতে প্রায় দেড় ঘণ্টা থেকে সমগ্র ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারে সদস্যদেরকে কাউন্সেলিং করেন। পুঞ্চার বিডিও দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাউন্সেলিং হওয়ার পর আমাকে মৌখিক রিপোর্ট করেছে। প্রথমে তাদের সাথে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছিল। আশা করছি পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে। “
মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে
সেভাবে লেখাপড়া করছিল না কেন্দার হরিহরপুর গ্রামের কিশোর তথা সপ্তম শ্রেণীর পড়ুয়া দেবাশীষ ওরফে বাপি প্রামানিক। মোবাইলের নেশা এমনই হয়ে গিয়েছিলো যে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই শুরু করে দিত মোবাইলে গেম খেলা। বছর ১৩-র কিশোরের এমন স্বভাব-প্রকৃতিতে রেগে গিয়েছিলেন তার মা। বকাঝকা করায় ছেলে অভিমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়। এই ঘটনায় হতভম্ব হয়ে যায় মা। ঘটনা দু’দিনের মধ্যে তিনিও গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির বারান্দা থেকে মা সুশীলা প্রামানিকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরপর এই দুটি ঘটনায় একেবারে ভেঙে পড়েন বাবা নীলকমল ও তার মেয়ে। তাদেরকে সামাল দিতে থাকেন আত্মীয়রা। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আর যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্যই কমিটি পরিবারের সদস্যদের কাউন্সেলিং করা হয়।
নীলকমল বাবু ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে কাজ করেন। দুই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার পর বাড়িতে থাকত স্ত্রী ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলের মর্মান্তিক ঘটনার পরেই নীলকমল বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু তার স্ত্রীও এভাবে আত্মঘাতী হবেন তা তিনি ভাবতেই পারছেন না।
Post Comment