insta logo
Loading ...
×

‘যা পাখি উড়ে যা…’, থিমে নজর কাড়ছে বরাবাজারের লক্ষ্মীপূজো

‘যা পাখি উড়ে যা…’, থিমে নজর কাড়ছে বরাবাজারের লক্ষ্মীপূজো

সঞ্জয় চৌধুরি, বরাবাজার:


‘যা পাখি উড়ে যা…।’ খাঁচা বন্দি নয়। মুক্ত আকাশে ডানা মেলুক। তাই পক্ষীকূলকে এই ভুবনে নিজেদের মতো জায়গা করে নিতে লক্ষ্মী পূজোতে বার্তা দিল জঙ্গলমহল বরাবাজারের পূজো কমিটি। বরাবাজার সার্বজনীন লক্ষ্মী পূজার এবার থিম হলো পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচিয়ে লুপ্তপ্রায় ভারতীয় পক্ষীকূলকে বাঁচিয়ে রাখা।

মন্ডপ জুড়ে ছবি ও সচেতনতার বার্তাতে এই ভাবনা ফুটিয়ে তুলেছে ওই পূজো কমিটি। নানাভাবে পক্ষীকূল আজ বিপন্ন। তাদের মিষ্টি ডাক, কিচির মিচির আর সেভাবে শোনা যায় না শহরাঞ্চলে। এমনকি তাদের বিচরণ কমছে গ্রামেও। তাদের খাবার খাদ্যশস্যে রাসায়নিক থাকায় তারা যেমন সংকটে পড়েছে। তেমনই মোবাইল টাওয়ার থেকে নির্গত বিকিরণের কবলে পড়ে তাদের প্রজননের সমস্যা হচ্ছে। মোবাইল টাওয়ার যত বেড়েছে। ততই কমেছে পাখির সংখ্যা। আর সেই কথা মাথায় রেখে নিজেদের উপলব্ধি থেকে লক্ষ্মীপূজায় এমন থিম
তুলে ধরে নজর কেড়েছে ওই পূজো কমিটি। ওই পূজো কমিটির অন্যতম কর্মকর্তা অজয় বড়াল বলেন, ” বেশ কিছু পাখি ইতিমধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে। চড়ুই পাখি এখন আর সেভাবে দেখা মেলে না। শহরাঞ্চলে লক্ষ্মীপেঁচাও আর দেখা যায় না। যদিও পুরুলিয়ার ছবিটা আলাদা। এইসব বিষয়কে মাথায় রেখেই আমাদের পুজোর থিম পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচানো। সেই সঙ্গে পক্ষীকূলকে বাঁচিয়ে রাখা।”

এই পূজো এবার ২৭ বছরে পড়েছে। প্রতিবারই এই পূজো হয় থিম কেন্দ্রিক। গতবছর চন্দ্রযান-৩ কে সামনে রেখে ‘ভারত এক যোগ ক্ষেত্র’ ভাবনায় এই মণ্ডপ সাজিয়ে তুলে সমগ্র জেলাতেই প্রশংসিত হয়। এবারও তাদের থিমের প্রশংসা করছেন মানুষজন। বরাবাজার বনাঞ্চলের রেঞ্জ আধিকারিক হীরক সিনহা বলেন, “যে কথা আমরা বলতে চাই। যে বার্তার মধ্য দিয়ে আমরা মানুষজনকে সচেতন করি সেই বার্তা বরাবাজারের এই পূজো কমিটি তুলে ধরেছে। তাদেরকে কুর্নিশ জানাই। “

এবার বুধ ও বৃহস্পতি দু’দিন লক্ষ্মীপুজো। তবে বুধবার রাতেই ওই মন্ডপে পূজো হয়ে যায়। পূজোর আগে নেঙসাই নদী থেকে বারি আনা হয়। বহু মানুষ তাতে শামিল হন। আলপনা ও রোঙ্গলিতে আলাদা চোখ টানছে এই পূজো কমিটির মণ্ডপ। দুর্গাপুজোর আগে থেকেই এই লক্ষ্মীপুজোর প্রস্তুতি শুরু করেন ওই পূজো আয়োজকরা। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূজো কমিটি থেকে পায়েস বিলি হবে। সেই পায়েস ভোগ নিতে প্রায় ৫ হাজারের মানুষের ভিড় হয়। ওই ভিড় ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আয়োজকদের দাবি। সবে মিলিয়ে কোজাগরি এই লক্ষ্মীপূজোর মণ্ডপ যেন পূর্ণিমার আলোর মতোই
ঝলমল।

Post Comment