নিজস্ব প্রতিনিধি, কোটশিলা: মদ খেয়ে ধরা পড়লেই মার। তারপর জরিমানা করে পুলিশের হাতে। বেআইনি কাজকর্মের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষজনই আইন হাতে তুলে নিয়ে উচিত শিক্ষা দিতে রীতিমতো ব্যানার টাঙিয়ে সতর্ক করলো। এবারও সেই ঝালদা ২ নম্বর ব্লক। উপরবাটরির পর হীরাপুর- আদারডি গ্রাম পঞ্চায়েতের দুয়ারসিনি। এবারে ব্যানার টাঙিয়ে মদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি। সেই সঙ্গে জুয়া, ঝান্ডির বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা। গ্রামের দুয়ারসিনি মহিলা সমিতির সঙ্গে সাধারণ মানুষজনের এই আন্দোলনের ফলে ৩-৪ দিন আগে থেকে গ্রামে দুটি মদের ঠেক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও থেমে থাকেননি গ্রামবাসীরা। শনিবার গ্রাম থেকে গাড়ি করে কোটশিলা থানায় এসে বেআইনি মদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়ার
দাবি জানান তারা।
বছর দেড়েক আগে ঝালদা ২ নম্বর ব্লকের উপরবাটরি এবং তারপর আড়শার মানকিয়ারি গ্রাম পঞ্চায়েতের চিটিডি,বেলডি গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুনডিহাতে এভাবেই বেআইনি মদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন মহিলারা। হয়েছিল দেওয়াল লিখন। একইভাবে দুয়ারসিনির গ্রামে ব্যানারের শিরোনামে লেখা আছে দুয়ারসিনি গ্রামে নিষেধাজ্ঞা জারি। তারপর তাদের আবেদন দুয়ারসিনি গ্রামে মদ, নেশা জাতীয় দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ ও জুয়া, ঝান্ডি খেলা নিষেধ। ধরা পড়লে মাইর ও জরিমানা। তারপর পুলিশের হাতে। সেই সঙ্গে বিশেষ দ্রষ্টব্য-এ পয়েন্ট করে লিখেছেন গ্রামে মদ বিক্রি, জুয়া খেলা বন্ধ, মদ খেয়ে ঝামেলা করা বন্ধ, গ্রামের আশেপাশে মদ খাওয়া বন্ধ, বিবাহ ঘরে বা কোন অনুষ্ঠানে মদ দেওয়া ও খাওয়া বন্ধ, বিবাহ বাড়িতে বাইরের লোক মদ খেয়ে এসে ঝামেলা করা বন্ধ। বিনীতর নিচে দুয়ারসিনি মহিলা সমিতি ও গ্রামবাসী গনের নামের পাশাপাশি মোট ছটি মোবাইল নম্বর রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মদের বোতল এবং তাসের উপরে ক্রস চিহ্ন দিয়ে দিয়েছেন তারা। ওই গ্রামের বাসিন্দা ফুলু মাহাতো অষ্টমী মাহাতো বলেন, ” গ্রামে ২ টি মদের ঠেকের জন্য পুরুষ মানুষরা কার্যত নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছিলেন l হাতে পয়সা না থাকায় সংসার চালাতে সমস্যা হচ্ছিলl এছাড়া মদ খেয়ে প্রতি পরিবারে অশান্তি লেগে থাকত। পুলিশ ও আবগারি দপ্তরকে বলেও সুরাহা হয়নি। তাই আমরা এভাবে পথে নেমেছি। মদ,জুয়া, ঝান্ডির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছি। ” কিন্তু তাই বলে মার, জরিমানা? ওই গ্রামের বাসিন্দা আশুতোষ মাহাতো বলেন, ” বিধি বহির্ভূত কাজ করলে কিছু তো শিক্ষা দিতে হবে। সেই জন্যই আমরা ওইভাবে ব্যানার করেছি। আমরা যা করছি তা তো গ্রামের মানুষজনের ভালোর জন্যই। ” এদিন প্রায় ৫০ জন মিছিল করে কোটশিলা থানায় যান। পুলিশকে জানিয়ে আসেন বেআইনি মদ বন্ধ না হলে আন্দোলন বৃহত্তর হবে। তবে বেআইনি মদ রুখতে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সচেষ্ট। শুধু শহরাঞ্চলে নয়, গ্রামে গ্রামে ধারাবাহিক অভিযানও চলছে পুলিশের।
Post Comment