insta logo
Loading ...
×

বলিদানের তরোয়াল ঢেকে শান্তির বার্তা বান্দোয়ান ওসি-র

বলিদানের তরোয়াল ঢেকে শান্তির বার্তা বান্দোয়ান ওসি-র

নিজস্ব প্রতিনিধি, বান্দোয়ান :

আর রক্ত নয়। বলিদানের তরোয়ালের ‘উগ্রতা’ কমাতে পুজো আয়োজকরা আসেন থানায়। আর সেই তরোয়ালকে থানার অঙ্গনেই গামছা দিয়ে মুড়ে শান্তির বার্তা দেন ওসি। তবে খাঁকি উর্দি বা কেমোফ্লেজ পোশাকে নয়। একেবারে সাদা ধবধবে ধুতি- গেঞ্জি ও লাল গামছা জড়িয়ে উপোস থেকে বলিদানের ওই তরোয়ালকে গামছা দিয়ে ঢেকে দেন। মহাঅষ্টমীতে সন্ধিপুজো শেষে ৮৯ বছর ধরে এই রীতি হয়ে আসছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান পুরাতন সার্বজনীন দুর্গাপুজো মন্ডপে। যার সাক্ষী বান্দোয়ান থানা সহ এই বনমহল।

ধর্মীয় ভাবাবেগকে কোনরকম আঘাত না দিয়ে সেই প্রথার মধ্য দিয়েই পুজোর মধ্যে থানার ওসির এমন শান্তির বার্তা রাজ্যে নজির। বান্দোয়ানের পুরাতন সার্বজনীন দুর্গা পুজো কমিটির সদস্য অমিতকুমার আগরওয়াল বলেন, “আমাদের পুজোয় কোনোদিন প্রাণী হত্যা ছিল না। একেবারে প্রথম থেকে চালকুমড়ো ও ইক্ষু বলি হয়ে থাকে। যে তরোয়াল দিয়ে ওই বলি দেওয়া হয় সেই তরোয়াল আমরা প্রশাসনের কাছে অর্থাৎ বান্দোয়ান থানায় নিয়ে আসি। ওই থানার ওসি সেই তরোয়ালকে লাল গামছা দিয়ে মুড়ে ‘উগ্রতা’ কমিয়ে দেনl এর মধ্য দিয়ে তিনি শান্তির বার্তা দেন।”

এই পুজো কমিটি ভেঙে ২০১১ সাল থেকে নব দুর্গা বান্দোয়ান সার্বজনীন কমিটি নামে ব্লক সদরে আরেকটি পুজো হচ্ছে। ওই কমিটিও একইভাবে তাদের বলিদানের তরোয়াল থানায় ওসির হাতে তুলে দেন। ওই তরোয়ালেরও একইভাবে গামছা মোড়া হয়। বান্দোয়ান নব দুর্গার সার্বজনীন পুজো কমিটির সদস্য সঞ্জয় হালদার বলেন, “১৩ বছর ধরে আমাদের পুজো কমিটিতেও এই রেওয়াজ চলছে । বলি দেওয়া তরোয়ালকে থানায় নিয়ে এসে তাকে শান্ত করা হয়। উগ্রতা কমানো হয়। আর এই কাজের মধ্যে দিয়েই শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে।”

বান্দোয়ানের এই দুই দুর্গাপুজোয় কিভাবে স্বয়ং ওসি শামিল হন তা দেখতেও ভিড় জমে যায়। একদা মাওবাদী উপদ্রুত এই এলাকায় ওসি কোন ক্যামোফ্লেজ পোশাক গায়ে দেন না। এই সময় থাকে না তার খাকি উর্দি। ধুতি-গেঞ্জি, গামছায় তাঁর যেন অন্য রূপ! এ বিষয়ে বান্দোয়ান থানার ওসি শ্রীকান্ত মুলা কোনো কথা বলতে চাননি। তবে থানার তরফে জানানো হয়েছে, দুই দুর্গাপুজোর এটাই রীতি। যেখানে পদাধিকার বলে এই রীতির সঙ্গে জড়িয়ে যান ধুতি-পাঞ্জাবি-গামছায় ওসি। রীতি এমনই যে বলিদানের তরোয়াল থানায় নিয়ে আসার সময় অনুমতি লাগে না সেন্ট্রির।

Post Comment