বিশ্বজিৎ সিং সর্দার, বাঘমুন্ডি:
এ যেন স্বপ্ন পূরণের পরিদর্শন। এতদিনের দাবি পাচ্ছে বাস্তব রূপ। তারই পরিদর্শনে অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা।
রাজ্যের পালাবদলের পর জঙ্গলমহলে শুরু হয়েছে উন্নয়নের জোয়ার। সহজ হয়েছে যোগাযোগের মাধ্যম। তবু এরই মধ্যে দুর্গমতার কারণে অযোধ্যা পাহাড়ের কয়েকটি গ্ৰামে পাকা রাস্তা না থাকায় সমস্যার মুখে পড়তে হতো এলাকাবাসীদের।
মাসকয়েক আগে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় পাহাড়ের প্রত্যন্ত গ্ৰামে গিয়ে দেখেন ছাতরাজারা থেকে খুনটাঁড়,ভায়া আমকোচা বড়োগোড়া যাতায়াতের রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত বেহাল।এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। একদিকে জেলা পরিষদ অন্যদিকে ব্লক প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করেন। তারপরই এলাকাবাসীর দাবি মেনে রাস্তা নির্মাণের জন্য একাধিক পর্যায়ে সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয়। শুরু গিয়েছে রাস্তা নির্মাণের কাজ। আমকচা থেকে বড়গড়া স্কুল পর্যন্ত ৫২২ মিটার রাস্তা এবং উরমা স্টেশন থেকে খুনট্যাঁড় হয়ে হেদেলবেড়া পর্যন্ত মোট ৩.৭০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মীয়মান।
বৃহস্পতিবার ওই দুটি রাস্তার কাজ পরিদর্শনে উপস্থিত হন অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির সদস্যরা। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন তারা। এদিন বাঘমুন্ডি ব্লকের অযোধ্যা গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বড়গড়া গ্ৰামে গাছের তলায় বসে এলাকার উন্নয়নের বিষয়ে তাদের আলোচনা করতে দেখা যায়।
অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির সভাপতি বলিবাস মুর্মু বলেন, “বড়গড়া এলাকায় যে রাস্তা হচ্ছে সে রাস্তার কাজ দেখার উদ্দেশ্যে আজকে এখানে আসা।
বড়গোড়া, ধান চাটানি, লুকুই চাটানি, আমকচা প্রভৃতি গ্রামগুলি থেকে আদিবাসী জনসাধারণদের নিয়ে বৈঠক করা হচ্ছে। এই বৈঠকের মাধ্যমে তাদের এই রাস্তার গুরুত্ব যে কতটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন পর পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপারের উদ্যোগে এই কাজ হচ্ছে। এই রাস্তা কিন্তু কারওর দয়ার দান নয়, এ রাস্তা আপনাদের প্রাপ্য। এ রাস্তার কাজ যাতে ভালোভাবে হয় তা সকলকে মনোযোগ সহকারে দেখতে হবে। নির্দেশিকা অনুযায়ী নির্মাণ সামগ্রী যাতে সঠিক দেওয়া হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। গ্রামবাসীদের পাশাপাশি এই সভাতে ঠিকাদার সংস্থার সাথেও কথা বলা হয়।
আজ সমিতির পক্ষ থেকে দুটি রাস্তা পরিদর্শন করা হয়েছে খুনট্যাঁড় থেকে হেদেলবেড়া রাস্তা এবং এই বড়গোড়া গ্রামের রাস্তা পরিদর্শন করা হয়। কথা বলা হয় কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের সাথেও। তাদের অভিযোগ কী, সেটাও শোনা হয়।। হেদেলবেড়া থেকে খুনট্যাঁড় রাস্তার কাজে কিছু ত্রুটি দেখতে পেয়েছি। চারটি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, দেখতে পেয়েছি। তাই ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছি।”
তিনি বলেন,”অযোধ্যা পাহাড় আদিবাসী উন্নয়ন কমিটির উদ্দেশ্য হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রকল্পগুলি যাতে সঠিক নির্দেশিকা পালন করে সম্পন্ন হয় সেগুলি দেখা। সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উন্নয়নের পাশে থাকবে।”
Post Comment