দেবীলাল মাহাত, আড়শা:
জমিদারের দানের জমিতেই প্রায় ২৫০ বছর ধরে দুর্গাপুজা হয়ে আসছে আড়শা ব্লকের রাঙামাটি গ্রামে। প্রতিমার মাটি থেকে পাঁঠা বলি, ফুল থেকে মন্দির পরিষ্কার, মশাল থেকে ঘি। সব কিছুর জন্য জমি দান করেছিলেন জোহানিলাল নামে এক জমিদার। যিনি পঞ্চকোট রাজপরিবারের সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনিই প্রথম গ্রামে দুর্গাপুজা শুরু করেন। রাজা, রাজতন্ত্র, জমিদার না থাকলেও, প্রথা ও ঐতিহ্য মেনে আজও পুজা হয়ে আসছে আড়শার রাঙামাটি গ্রামে।
এই পুজোর সঙ্গে পঞ্চকোট রাজপরিবারের কাশিপুরের দেবী বাড়ির পুজার সম্পর্ক রয়েছে। সন্ধি পুজায় পঞ্চকোটের দেবী বাড়িতে সিঁদুর ভর্তি থালাতে মায়ের ছাপ পরিলক্ষিত হয়।আর সেই ছাপ দেবী বাড়িতে দেখতে পাওয়ার সাথে সাথে এখানের পুজোর মায়ের চরণে থাকা ফুল শূন্য থালায় এসে পড়ে। সেই সময় মায়ের চরণে থাকে তিনটি পদ্ম,পাঁচটি তুলসি পাতা , দুর্বাঘাস ও সুপারি। ঐতিহ্য মেনে জিতা অষ্টমী থেকে শুরু করে দশমী পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যার দিকে গ্রামের ভিতর বাজনা বাজানো হয়। যাকে বলা হয় ‘ধুমল’। বর্তমানে পুজোর দায়িত্বে রয়েছে গ্রামের শেঠ পরিবার । বর্তমান পূজারি পূর্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জানান, ” “অতীতের সব নিয়ম নীতি মেনে আমাদের পুজা হয়। পুজোয় শুধু রাঙামাটি নয়, লাগোয়া পাটট্যাড়, আশারামডি, কাহান, করন্ডি গ্রামের মানুষজনও শামিল হন। পুজো উপলক্ষ্যে আয়োজিত হয় ফুটবল খেলাও।” এবছর গ্রামবাসীরা সম্মিলিত ভাবে পুরানো মন্দির ভেঙে নতুন মন্দির বানিয়েছে। সবমিলিয়ে এখন থেকেই উৎসবের আবহ রাঙামাটি জুড়ে।
Post Comment