insta logo
Loading ...
×

দুর্ঘটনা, রক্ত, গ্রেপ্তারি তবু থামছে না কাড়া লড়াই

দুর্ঘটনা, রক্ত, গ্রেপ্তারি তবু থামছে না কাড়া লড়াই

দেবীলাল মাহাত, আড়শা :

ঘটছে দুর্ঘটনা, ঝরছে রক্ত। তবু লড়াইয়ের ময়দানে নামছে কাড়া। গতকাল জয়পুরে দুর্ঘটনার পরও পাশের ব্লক আড়শাতে আজ সোমবারেই বসল কাড়া লড়াইয়ের আসর। সৌভাগ্যক্রমে এখানে ঘটেনি কোন দুর্ঘটনা। ঝরেনি রক্ত। ছিল পর্যাপ্ত পরিমাণে স্বেচ্ছাসেবক। দেওয়া হয়েছিল বাঁশের ব্যারিকেড। গতকাল রবিবার জয়পুর ব্লকের রাঙ্গুনিটাঁড় গ্রামে কাড়া লড়াইয়ের আসরে ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা। একটি কাড়ার শিং চিরে দেয় এক দর্শককে। আহত হন আরও দুই জন। জয়পুর থানার পুলিশ একটি স্বতঃপ্রনোদিত মামলা করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম শত্রুঘ্ন পরামানিক, নির্মল মাহাতো,সনাতন মাহাতো এবং বিবেকানন্দ মাহাতো। এদের সকলের বাড়ি জয়পুর থানার রাঙ্গুনিটাঁড় গ্রামে। কেন গ্রেপ্তারি? আসলে কাড়া লড়াই মানভূমী সংস্কৃতির অঙ্গ হলেও প্রশাসনিক দৃষ্টিতে সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। ‘প্রিভেনশন অফ ক্রুয়েলটি টু এনিমেল অ্যাক্ট’ কে সামনে রেখে ২০১৬ সাল নাগাদ পুরুলিয়া জেলা পুলিশ এই বেআইনি কাড়া লড়াই বন্ধ করতে পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু সাবেক মানভূমের সংস্কৃতির অঙ্গ হিসাবে প্রবহমান এই কাড়া লড়াই কে বাঁচাতে আন্দোলন শুরু হয় পুরুলিয়া জেলায়। আন্দোলনের জেরে আবেগের কাছে হার মানতে হয় আইনকে। অতীতে এই কাড়া লড়াই ঘিরে একাধিকজনের মৃত্যু হয়েছে।জখম হয়েছেন বহু। কিন্তু তারপরও শিক্ষা নেয়নি আয়োজকরা বলে অভিযোগ। রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই বিনোদন চলছে জঙ্গলমহল পুরুলিয়ায়। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও। দুর্গাপূজার পর শীতল বাতাস বইতে না বইতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছে এই কাড়া লড়াই। চলবে চৈত্র মাসে শেষ দিন পর্যন্ত।
সোমবার আড়শা ব্লকের কুদাগাড়া ষোলআনা কমিটির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল কাড়া লড়াই। লড়াই দেখার জন্য পুরুলিয়া, বাঁকুড়া সহ ঝাড়খণ্ডের কয়েক হাজার মানুষ মাঠে হাজির ছিলেন। মোট ৫ জোড়া অর্থাৎ ১০টি কাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। তবে এখানে কোনো অঘটন ঘটেনি। মাঠের চারিদিকে বানানো হয়েছিল বাঁশের ব্যারিকেড। যথেষ্ট পরিমাণে ছিল স্বেচ্ছাসেবক। দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য বারবার মাইকে ঘোষণা করা হয়েছিল। দিন শেষে কাড়ার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দেখে মন ভরেছে দর্শকদের। সাবেক মানভূম থেকে জেলাবাসীর মধ্যে কাড়া লড়াই শুধু চিত্তবিনোদনের অঙ্গ হিসাবে নয় প্রাচীন সংস্কৃতি হিসাবে মিশে গেছে। আবেগকে সঙ্গী করে মানভূমের অনেক মানুষ কাড়া লড়াইয়ে বীরত্বের স্বাদ অনুভব করেন।

Post Comment