insta logo
Loading ...
×

এক মুসলিম ওসি দেখা পেলেন মা কালীর! কী হলো তারপর

এক মুসলিম ওসি দেখা পেলেন মা কালীর! কী হলো তারপর

অমরেশ দত্ত, পুঞ্চা :

১৩৫৭ বঙ্গাব্দ। তখন পুরুলিয়া জেলার পুঞ্চা থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার জিটি লতিফ।পুঞ্চা থানা থেকে অল্প দূরত্বে ছিল একটা ছোট্ট নির্জন টিলা। সেই নির্জনে গিয়ে বসতেন ওসি লতিফ। কেউ কেউ বলেন ওই ডুংরি ছিল পুলিশের ওয়াচ টাওয়ার। “এক রাতে স্বপ্নে সেই মুসলিম সম্প্রদায়ের ওসি দর্শন পেয়েছিলেন মা কালীর।” জানালেন পুঞ্চার চরণপাহাড়ি কালী মন্দিরের বর্তমান পুরোহিত তথা পুঞ্চার বাসিন্দা শ্রীধর চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “স্বপ্নে ওসি জানতে পারেন ওই টিলার উপরে কালো পাথরে মায়ের চরণ খোদাই করা আছে। পরে লতিফ সাহেব পাহাড়ে এসে পাথরের উপরে দেবীর খোদাই করা চরণ দেখতে পান। স্বপ্নে দেবী নাকি ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সেখানে দেবীর পুজো করানোর। স্বপ্নে যা দেখেছেন, বাস্তবে হুবহু দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ওসি। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে আলোচনা করে ওই ডুংরির উপরে মন্দির নির্মাণ করান তিনি। আর তখন থেকেই পূজিত হয়ে আসছেন মা কালী।স্বপ্নাদেশ থেকে পাওয়া দেবীর সেই চরণ এখনও মা কালীর মূর্তির পাশেই রাখা হয়। প্রতিদিন পুজো পাঠ হয়। সন্ধ্যায় হয় আরতি।”

সেদিনের সেই ছোট্ট মন্দির ১৪০৩ বঙ্গাব্দে বেড়ে ওঠে বহরে। সৌজন্যে পুঞ্চা থানার তৎকালীন ওসি সমরকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।টিলার উপরে ওঠার সিঁড়িও তৈরি হয়েছে পরবর্তী সময়ে। প্রত্যেক বছর কালীপুজোয় নতুন রূপে সেজে ওঠে চরণ পাহাড়ির কালী মন্দির। শুধু এলাকার মানুষজন নয়, দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন পুজো দিতে। শুধু পুজোর দিন নয়, সারা বছর ভক্তদের সমাগম লেগে থাকে।

লোক বিশ্বাস, অনেকের মানত পূরণ করেছেন দেবী। ফলে তারা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দেবীকে অলংকার গড়িয়ে দেন। মা কালীর সে সব অলংকার সারা বছর থাকে পুঞ্চা থানার লকারে।
মন্দিরে নিয়ম মেনে সেই প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এখনও হয় ছাগ বলি। কালীপুজোর পরের দিন হয় নরনারায়ণ সেবা।

স্বপ্নে দেখা মা কালীর চরণ থেকে টিলার উপর তৈরি হয়েছিল মন্দির। সেই থেকেই মন্দিরের নামকরণ হয়েছে ‘চরণ পাহাড়ি’। মন্দিরের প্রাচীন ইতিহাস এক করে দেয় সমস্ত জাতিকে। মুসলিম সম্প্রদায়ের অফিসারের হাতে প্রতিষ্ঠিত কালী মন্দিরে আজ সমান উৎসাহে পূজিত হন মা কালী। এই মন্দির এখন জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সম্প্রীতির বার্তা বহন করে।

Post Comment