নিজস্ব প্রতিনিধি, বরাবাজার :
সেই জননীর গর্ভ থেকে এক সঙ্গে আছে তারা। জন্মও হয়েছে কয়েক মিনিটের তফাতে। দেখতে হুবহু এক না হলেও অনেকটা মিল। স্বপ্ন এক, স্কুল এক, পাঠ্যও এক। শুধু তফাত উচ্চ মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরে।
বরাবাজার ব্লকের বামুনডিহা হাইস্কুলের ছাত্র যমজ ভাই শুভদীপ দাস ও মঙ্গলদীপ দাস।
পুরুলিয়ার মানবাজার ২ নং ব্লকের জাওড়া গ্রামে তাদের বাড়ি। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শুভদীপ দাস পেয়েছে ৪৮৬।
২ নম্বরের জন্য তার জায়গা হলো না রাজ্যের মেধা তালিকায়। মঙ্গলদীপ পেয়েছে ৪৬৩। দুজনেই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র।
শুভদীপ বাংলায় পেয়েছে ৯৫, ইংরেজিতে ৯৭, রসায়নে ৯০, অংকে ১০০, পদার্থবিদ্যায় ৯৮, জীব বিদ্যায় ৯৬। অন্যদিকে মঙ্গলদীপ বাংলায় ৯২, ইংরেজিতে ৯০, রসায়নে ৯০, অঙ্কতে ৯৯, পদার্থবিদ্যায় ৯২, জীববিদ্যায় ৯০।
দুই ভাইয়ের মিল প্রচুর। দু’জনই ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে কোচিং সেন্টারে পাঠ নেওয়ার পাশাপাশি দু-ভাই-ই আট ঘণ্টা করে লেখাপড়া করতো। উভয়ের শখ সিনেমা দেখা ও বই পড়া। খাবারে পছন্দ বাঙালি রান্না। দু’জনের প্রিয় লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর পথের পাঁচালী দু’জনেরই প্রিয়। দু’জনেই সিনেমা দেখতে ভালোবাসে। দক্ষিণী ছবি থেকে হলিউড।
শুভদীপ জেলার সেরা।
দুজনের একই পছন্দ। তাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হরপ্রসাদ পাত্র বলেন, ” ওরা দু’জন যদি একই নম্বর পেতো তাহলে খুবই ভালো হতো। “
বাবা শ্যামসুন্দর দাস মুদিখানার দোকান করে সংসার চালান। সামান্য রোজগার। তিনি বলেন, “মুদি দোকান করে কোনভাবে সংসার চালাই। ছেলেদের উচ্চ মাধ্যমিকের লেখাপড়ার জন্য কোচিং সেন্টারে দিয়েছিলাম। একজনকে ওই সেন্টার কর্তৃপক্ষ ফ্রি করে দিয়েছিল। না হলে বোধহয় পড়াতে পারতাম না। তবে আগামী দিনে কী হবে জানি না। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, ওরা যতদূর পড়তে চায়, তত দূর যেন পড়াতে পারি। জীবনে যেন নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।”
Post Comment