insta logo
Loading ...
×

নববর্ষের খরতাপে খানাপিনার পর্যটনে পুষ্ট পুরুলিয়া

নববর্ষের খরতাপে খানাপিনার পর্যটনে পুষ্ট পুরুলিয়া

নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া :

কী খাবেন বলুন দেখি? বৈশাখি মহাভোজ না বৈশাখি ভুরিভোজ?

পয়লা বৈশাখের পর্যটনে এ যেন অন্য পুরুলিয়া!
প্রকৃতির আজব খেয়ালে চাঁদিফাটা রোদ্দুর গায়েব। লু যেন গুটিয়েছে পাততাড়ি। নাকে বয়ে আসছে মহুলের গন্ধ।

দুলছে লাল কৃষ্ণচূড়া। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ঘরে। এসি তো দূর অস্ত, পাখার সুইচ টেপারও দরকার হচ্ছে না অযোধ্যা পাহাড়ে। রাত নামলেই গায়ে চাপাতে হচ্ছে চাদর। রাজ্যের উষ্ণতম জেলা পুরুলিয়ায় পা রেখেও অযোধ্যা হিলটপ যেন সিকিমের পেলিং।

আর তাই নববর্ষে জমজমাট পুরুলিয়ার পর্যটন। অযোধ্যা থেকে গড় পঞ্চকোট। বড়ন্তি থেকে দুয়ারসিনি। কালবৈশাখীর দাপট আবহাওয়ার খরতাপ কেড়ে নিয়েছে। ফলে অযোধ্যা পাহাড়, গড় পঞ্চকোট, বড়ন্তি এমনকি দলমা পাহাড় রেঞ্জ ছুঁয়ে থাকা দুয়ারসিনিতেও সন্ধ্যার পর ঠান্ডা ঠান্ডা, কুল কুল!


নববর্ষে এলাহি খানাপিনার আয়োজন পর্যটনকেন্দ্রগুলোয়। অযোধ্যা পাহাড়ে বৈশাখি মহাভোজে মোচার চপ,
ঢাকাই মুর্গ, এঁচোড়ের কালিয়া, সাদা ভাতের ওপর দেশি ঘি নজর কাড়ছে।

পুরুলিয়ার পর্যটন আর শুধু মরশুম কেন্দ্রিক নয়। বেড়েছে জঙ্গল। ফলে সন্ধ্যের সময় থেকে যে হাওয়া চলে তাতেই পরিবেশ একেবারে মনোরম।সামাজিক মাধ্যম জানিয়ে দিচ্ছে গ্রীষ্মের শুরুর উইক এন্ড পুরুলিয়ার পাহাড়ি এলাকায় এনেছে এমন আবহাওয়া। শুক্র ও শনি অযোধ্যা পাহাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় সন্ধ্যার পর পর্যটকদেরকে গায়ে চাদর চাপাতে হচ্ছে। আর এমন আবহাওয়ার মজা নিতে হোটেল, লজ, কটেজ, রিসর্ট,
সরকারি অতিথি আবাস সব হাউসফুল।

অযোধ্যা হিলটপের কচুরিরাখায় রাজ্যের পর্যটন প্রকল্পের লিজ পাওয়া রিসর্টের জেনারেল ম্যানেজার সুদীপ্ত কুমার বলেন, “গরমেও পুরুলিয়ার আলাদা একটা রূপ আছে। সেটা আমরা বাংলার পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরেছি।

তাপপ্রবাহেও সন্ধ্যার পর থেকে অযোধ্যা পাহাড়ের আবহাওয়াটা একেবারে বদলে যায়। দিনের বেলায় ইনডোরে পর্যটকদেরকে নানান কিছুতে ব্যস্ত রেখে সন্ধ্যার দিকে মনোরম আবহাওয়ার মজা সেটা আমরা আমাদের পর্যটন প্রকল্পে তুলে ধরেছি। তাছাড়া অযোধ্যা পাহাড়ের গত দু’দিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় এখানে একেবারে শীত-শীত ভাব। তাই ভীষণ মজা নিচ্ছেন নববর্ষের উইকএন্ডে বেড়াতে আসা বিপুল সংখ্যক পর্যটক।”

নববর্ষে বেড়ানোর সঙ্গে বাঙালির পেটপুজো ছাড়া তো চলবে না। তাই নতুন বাংলা বছরে অযোধ্যা পাহাড়েও একেবারে ষোলআনা বাঙালিয়ানা। ওই রিসর্টে পয়লা ও ২ রা বৈশাখ নববর্ষ স্পেশাল দুটি থালি থাকছে। একটি বৈশাখি মহাভোজ। আরেকটি বৈশাখি ভুরিভোজ।

তাতে কি নেই? লাল শাক ভাজা, শুক্তো, আলু ঝিঙে পোস্ত, এঁচোড়ের কালিয়া, ছানার মালাইকারি, লুচি, সাদা ভাত, ঘি, বাসন্তী পোলাও, ভেটকি মাছের পাতুরি, ঢাকাই মুর্গ, মাটন কষা, কাঁচা আমের চাটনি, পাকা আম, কমলাভোগ, মিষ্টি দই, মিষ্টি পান। বৈশাখি ভুরিভোজের জন্য খসবে ৭৯৯, মহাভোজের ৯৯৯ টাকা।

গড় পঞ্চকোট ইকো ট্যুরিজম থেকে শহর পুরুলিয়ার বাঙালি রেস্তোরাঁগুলিতেও এমন ভুরিভোজের আয়োজন রয়েছে। গড়পঞ্চকোট ইকো ট্যুরিজমের চিফ জেনারেল ম্যানেজার মৃন্ময় বসু বলেন, “নববর্ষের আগের উইক এন্ড।

সেই সঙ্গে তারপরের উইক এন্ড। পরপর দুটো সপ্তাহের শেষ-ই একেবারে হাউসফুল। আবহাওয়ার এমন বদল হয়ে যাওয়াতেই পর্যটক যেন উপচে পড়ছে।” পুরুলিয়া হোটেল,লজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহিত লাটা বলেন , “এখন দার্জিলিংয়ের পরেই পুরুলিয়ার পর্যটন। সারা বছর পুরুলিয়ায় ভিড় হচ্ছে। “

Post Comment