দেবীলাল মাহাত, আড়শা:
নোটবন্দির সময় খুচরো পয়সার আকাল নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন সাধারণ মানুষজন। সেই স্মৃতি সকলের কাছেই টাটকা। সেই সমস্যা অনেক খানি মিটলেও, আর এক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়েছে। কোনো নির্দেশিকা ছাড়াই পুরুলিয়ার আড়শা বাজার থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে এক টাকা, দু’টাকার কয়েন দেওয়া নেওয়া। এর জেরে সমস্যায় সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
আড়শা ব্লকের মানুষের মূল বাণিজ্য কেন্দ্র আড়শা বাজার। ফি দিন প্রচুর মানুষের আনাগোনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাজারের কোনো দোকানেই এক টাকা, দু’টাকার কয়েন নিতে চান না । জেলার অন্য ব্লক এলাকায় এতটা সমস্যা না হলেও, নোটবন্দির পর থেকে আড়শা বাজার এলাকায় প্রায় অলিখিত ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে এক টাকা ও দু’টাকার কয়েন দেওয়া নেওয়া। শুধু আড়শা বাজারেই নয়, আশেপাশের এলাকা গুলিতেও একই অবস্থা।

একটাকা,দু’টাকার জিনিসের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা। এক টাকার একটা জিনিষের প্রয়োজন থাকলেও নিতে হচ্ছে পাঁচটি। আড়শার বাসিন্দা দীপক মাহাত, রমেশচন্দ্র মাঝি জানান, “কোনো দোকানেই এক টাকা ও দু’টাকার কয়েন নিতে চান না । দু’টাকার জিনিস কিনতে গেলেও দিতে হচ্ছে ৫ টাকা। তিন টাকা ফেরত দেওয়ার বদলে দোকানদার চকলেট ধরিয়ে দিচ্ছেন । সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন দোকানদারেরাও। তারা জানান, “কয়েন জমা দিতে গেলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে বাধ্য হয়ে কয়েন দেওয়া নেওয়া বন্ধ করতে হয়েছে। তাছাড়া বড় বড় দোকান গুলোতে বেশি পাঁচ টাকার কয়েন দিলেও অতিরিক্ত ‘বাটখারা’ দিতে হচ্ছে। একটাকা ও দু’টাকা কয়েনের তো কথা-ই নেই। এনিয়ে মাঝে মাঝে খদ্দেরের সঙ্গে কথা কাটাকাটিও হচ্ছে। ফলে সমস্যা বাড়ার আশঙ্কায় নিয়ম থাকলেও একটাকা ও দু’টাকার কয়েন দেওয়া নেওয়া বন্ধ করতে হয়েছে। এর জেরে ব্যবসাতেও প্রভাব পড়েছে বলে তারা জানান।
যদিও এক ব্যাঙ্কের ম্যানেজার জানান, “এক টাকার উপরে যত কয়েন আছে সবই বৈধ। কেউ কয়েন না নিলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন।” কিন্তু ব্যবসায়ীরা তো ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দিকেই কয়েন না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
তবে এই বিষয়ে উত্তর নেই ওই ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের কাছে। অর্থাৎ ব্যাঙ্ক নিজেও কয়েন নিতে চাইছে না। এই জাঁতা কলে পড়ে নাজেহাল আড়শা ব্লকের মানুষ। সমস্যায় খুচরো ব্যবসায়ীরাও । আস্ত একটা বাজার থেকেই অচল হয়ে পড়েছে এক টাকা ও দু’ টাকার কয়েন।











Post Comment