insta logo
Loading ...
×

বাঘ ধরতে মহিষ-ছাগল

বাঘ ধরতে মহিষ-ছাগল

সুজয় দত্ত, বিশ্বজিৎ সিং সর্দার :

“বাঘের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া আমরা বাঁচিয়া আছি”

বাঘ বাঘের মতো থাক, মানুষ মানুষের মতো। ভয় নেই, বরং বেশ আনন্দই লাগছে বাঘ আসায়। বান্দোয়ানের রাইকা জঙ্গলে এসেছে রয়্যাল বেঙ্গল বাঘিনী জিনাত৷ আর তারই প্রতিক্রিয়ায় এমন মনোভাব ফুটে উঠল রাইকা পাহাড়ের জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামগুলির মানুষের মধ্যে৷ রবিবার সকাল দশটা নাগাদ শেষবার বাঘিনীর লোকেশন ট্র্যাক করা গিয়েছে। ওড়িশার সীমানা পার করে ঝাড়গ্রাম লাগোয়া বেলপাহাড়ি জঙ্গল হয়ে আড়াই বছরের বাঘিনীটি পুরুলিয়ার রাইকা পাহাড়ে। মাইকিং করে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে পুলিশের তরফে। প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর৷ তবু আতঙ্ক নয়, বরং মানুষের মধ্যে অপার কৌতূহল আর উৎসবের মেজাজ। সেই মেজাজ নিয়ে পাহাড় সংলগ্ন জঙ্গলে হাজির হচ্ছেন তারা।

রাইকা পাহাড়ের চারপাশে মানুষের বসতি। কেশরা, বারুডি, উদলবনি, ঘাঘরা, সিরুগাড়ু, লেদাশোলের মতো গ্রামগুলি। গ্রামবাসীরা সবাই জঙ্গলের ওপর জীবনজীবিকার জন্য নির্ভর না করলেও একটা বড়ো অংশের মানুষের পেট চলে জঙ্গল ভরসায়। সেই পেটেই থাবা বসালো জিনাত। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে স্পষ্টতই নিষেধ করা হচ্ছে জঙ্গলে যেতে। তবু আতঙ্কের লেশমাত্র নেই এলাকাবাসীর মধ্যে। উদলবনির যিশুনাথ মাণ্ডি বললেন, জঙ্গলে যেতে দেওয়া হলে দল বেঁধে যাব। লালগড় বান্দোয়ান থেকে খুব একটা দূর নয়। বছর সাতেক আগে সেখানে একটি বাঘকে পিটিয়ে মারা হয়েছিল।
২০১৫ সালের ২০ জুন পুরুলিয়া জেলার কোটশিলা বনাঞ্চলের টাটুয়াড়ায় সাতসকালে লোকালয়ে চলে এসেছিল একটি চিতাবাঘ। এলাকার মানুষজন তাড়া করায় এক গৃহস্থের বাড়ির শৌচাগারে ঢুকে পড়ে। সেই খবর রটে যেতেই সেখানে আসে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক ওই শৌচাগারের দরজা খুলতেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে চিতা। জখম হন তিনি। এরপরেই গ্রামের শত শত মানুষ লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাড়া করে তাকে পিটিয়ে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দেয়l কেটে নেয় পা। উপড়ে নেওয়া হয়েছিল নখ।

সেই ছবির পুনরাবৃত্তি চাইছে না বান্দোয়ান। বন্যপ্রাণী কারো ক্ষতি না করলে তারাও বন্যপ্রাণীটির ক্ষতি করবেন না। বলছেন কেশরার রুহিদাস টুডু। এদিকে বাঘ ধরতে টোপ হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ২টি মহিষ ও ২টি ছাগল। ওড়িশার বন কর্মীরা জিনাতের পিছন পিছন ইতিমধ্যে পুরুলিয়া এসে গিয়েছেন। দুপুরেই ঝাড়গ্রাম থেকে বান্দোয়ানে এসেছে সুন্দরবনের টিমও।

Post Comment