insta logo
Loading ...
×

আশঙ্কা সত্যি করে ওড়িশার বাঘিনী পুরুলিয়ায়!

আশঙ্কা সত্যি করে ওড়িশার বাঘিনী পুরুলিয়ায়!

সুজয় দত্ত :

“কহিয়ে কাঁহা সে আনা হুয়া”

ষাট সত্তরে বহু হৃদয়ে কাঁপন ধরিয়েছিলেন বলিউড কুইন জিনাত আমান। এবারও কাঁপন ধরিয়েছে জিনাত। তবে এ কাঁপন অন্য৷ জিনাত এক রয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস। মানে বাঘিনী। পুরুলিয়ায় ঢুকে পড়েছে সে। রবিবার সকালে ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে পুরুলিয়ায় ঢুকে পড়েছে সে। সকাল দশটা নাগাদ শেষবার তার লোকেশন ট্র্যাক করা গিয়েছে। ওড়িশার সীমানা পার করে ঝাড়গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে পায়চারি করছিল তিন বছরের বাঘিনীটি। এই ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, ও ঝাড়খণ্ড ছুঁয়ে রয়েছে ময়ূরঝরণা হস্তি প্রকল্প। জিনাতের গলায় থাকা রেডিও কলার বলছে, রাতভর হস্তি প্রকল্পের আওতায় থাকা অরণ্যই ছিল তার বিচরণ ক্ষেত্র। সকাল দশটায় শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী কংসাবতী দক্ষিণ বন বিভাগের বান্দোয়ানের রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে জিনাত। তার খোঁজে হন্যে বনদপ্তরের কর্মীরা। চলছে মাইকিং৷ জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের করা হচ্ছে সতর্ক।

মহারাষ্ট্রের তাডোবা জঙ্গল থেকে যমুনা ও জিনাত নামে দুটি বাঘিনীকে ওড়িশার সিমলাপাল ব্যাঘ্র প্রকল্পে আনা হয়েছিল। রাখা হয়েছিল কোয়ারেন্টাইনে। চলছিল তাদের সফট রিলিজ করার পালা। ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্দরে তাদের গতিবিধি ছিল নিয়ন্ত্রিত।
হঠাৎই রাজ্যের সীমানা টপকে ফেলে তারা। প্রথমে জিনাত ও পরে ওড়িশা ছাড়ে যমুনা। প্রায় দেড় মাস। দুজনের গলাতেই রয়েছে রেডিও কলার বাঁধা। অ্যান্টেনা আছে ওড়িশার বনদফতরের কর্মীদের হাতে।
খবর রটেছিল ওড়িশা থেকে বাংলায় ঢুকেছে জোড়া বাঘ-যমুনা ও জিনাত। স্বস্তির ঘোষণা রাজ্যের বনদপ্তরের। রেডিও কলারের তথ্য বলছে, আপাতত যমুনা নামক বাঘিনীর অবস্থান ওড়িশার বালাসোরের জঙ্গলে।

কিন্তু জিনাত এখন পুরুলিয়ায়। ঝাড়গ্রাম পেরিয়ে রুখামাটির জেলাতে বাঘিনী। তার খোঁজে হন্যে বনদফতরের কর্মীরা। রবিবার সকাল সাতটা সাড়ে সাতটা নাগাদ পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে ১ বনাঞ্চলের ঘাঘরা থেকে রেডিও কলারের সিগনাল মিলেছিল। সকাল ১০ টা নাগাদ সে রাইকা পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে বলে খবর। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন বনদফতরের তাবড় আধিকারিকরা।
ওড়িশার বন কর্মীরা জিনাতের পিছন পিছন বাংলায় ঢুকেছেন। ইতিমধ্যে পুরুলিয়া এসে গিয়েছেন তাঁরা। আজ দুপুরের মধ্যে ঝাড়গ্রাম থেকে বান্দোয়ানে আসছে সুন্দরবনের টিমও। মূলত কীভাবে খাঁচা পাতা হবে, কীভাবে টোপ দেওয়া হবে, কীভাবে বাঘিনীটিকে ঘুম পাড়ানো হবে সেদিক নজর রাখা হচ্ছে।
বান্দোয়ান কংসাবতী সাব ডিভিশনের অন্তর্গত। এই ডিভিশনের অন্তর্গত তিনটি রেঞ্জ বান্দোয়ান ১, বান্দোয়ান ২ এবং যমুনা রেঞ্জের আধিকারিকরা ব্যাঘ্র সন্ধানে নেমেছেন। এছাড়া বরাবাজার এবং মানবাজার ২ রেঞ্জের অফিসার ও তাঁর দলকেও নামানো হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের ডিএফও পূরবী মাহাতো বলেন, “ জিনাত পুরুলিয়ায় প্রবেশ করেছে। এই খবর পাওয়ার পর আমরা সতর্ক রয়েছি। মাইকিং করে প্রচার চলছে।”

স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে জঙ্গলে যাওয়া চলবে না। কোনরকম খবর পেলে বনদফতরকে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে মাইকিং মারফত।

শ্যাডো জোন বলে কলার কাজ করছে না। তাই হয়তো জিনাত আমানের সেই বিখ্যাত গান জিনাত সন্ধানে বন দফতরের কলার টিউন হতেই পারে।

“হায় হায় ইয়ে মজবুরি
ইয়ে মৌসম অউর ইয়ে দুরি”

Post Comment