বিশ্বজিৎ সিং সর্দার :
এ এক অন্য কালীপুজো। অগ্রহায়ণ অমাবস্যা তিথিতে আদ্রা মেতে উঠল এই ভিন্ন শক্তি আরাধনায়।
মুণ্ডমালা তন্ত্রে দেবী শক্তির আরেক রূপ মা কমলা। দশ মহাবিদ্যার অন্যতম তিনি। তিনি বরাভয় প্রদায়িনী শুদ্ধ চৈতন্যের দেবী। ভাগ্যদেবী মহালক্ষ্মীর অন্যরূপ। তান্ত্রিক মহালক্ষ্মী নামেও অভিহিত করা হয় তাঁকে। তিনি ভয় থেকে মুক্ত করেন।
যিনিই দুর্গা, তিনিই কালি, তিনিই লক্ষ্মী আবার তিনিই হলেন মা কমলা। মা কমলার পূজা সাধারণত কার্তিক মাসে হয়ে থাকে। কিন্তু পুরুলিয়া জেলার আদ্রা রাঙ্গুনি গ্রামের মা কমলার পুজো অগ্রহায়ণ মাসের অমাবস্যা তিথিতে। মায়ের প্রতিমা ছাড়া, আদি শক্তি মহামায়া মা নারী রুপে পুজিত হন। পুজো অর্চনা, আরতি,হোম,যজ্ঞ,নিয়ম-নিষ্ঠা পরম্পরাতে মা কমলার আরাধনা হয় এখানে।
কথিত, আদ্রা রাঙ্গনি গ্রামের মন্দিরে মা কমলার কাছে প্রার্থনা করলে ভক্তদের মনস্কামনা মা পূর্ণ করেন দেবী। ৩২ বছর ধরে এই পুজো হয়ে আসছে এখানে একইভাবে। শুধু পার্শ্ববর্তী এলাকাই নয়, ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ, বাঁকুড়া, বর্ধমান সহ বহু দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন। যাঁদের মনস্কামনা পূর্ণ হয়, তাদের মধ্যে অনেকেই পুকুর ঘাট থেকে মন্দির পর্যন্ত দন্ডি দেন। মায়েরা অনেকেই তাঁদের সন্তানের মাথার চুল কামিয়ে মানত পূর্ণ করেন।
তবে এখানে কিন্তু মা কমলার মূর্তিতে পুজো হয় না। মা পূজিতা হন এক নারীর শরীরে ভর করে। অর্থাৎ মা কমলার ভরন আসে তাঁর শরীরে। তারপর দেবী রূপে তাঁকে পূজা করা হয়। রয়েছে বলির প্রথা। প্রসাদ বিতরণ হয়। হয় নরনারায়ণ সেবাও। প্রতি সপ্তাহে শনিবার, মঙ্গলবার ও শুক্রবার ২১ টি দেব- দেবীর পুজো হয়ে থাকে। প্রতি অমাবস্যাতেও নিষ্ঠা ভরে পুজো হয়। ভোগ বিতরণ করা হয় মন্দিরে।
Post Comment