নিজস্ব প্রতিনিধি, রঘুনাথপুর: উর্মিলা, সাথী, সন্দীপ, মিহির রঞ্জিত। তাদের ‘অপরাধ’ একটাই। তাদের বাবা-মা কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত। তাই তাদের ঠিকানা হয়নি বাস্তুভিটেতে। নিজের বাড়িতে। তাদের ঠিকানা আদ্রার মনিপুর হোম। আর সেই হোমেই তারা পালন করলো ভাইফোঁটা। বোনেরা দিল ভাইকে ফোঁটা। আর সেই ফোঁটা পেয়ে খুশিতে মাতল ভাইরা। এই ফোঁটাই ভাইবোনেদের ভালোবাসার বন্ধন যেন আরও মজবুত হল। খুশি যেন আরও চওড়া হলো পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার সৌজন্যে।
রবিবার তিনি যে এই হোমে পা রেখে ওই ভাই-বোনেদের সঙ্গেই ভাইফোঁটার আনন্দ ভাগ করে নিলেন। শুধু তাই নয় উর্মিলা, সাথীর কাছ থেকে ফোঁটাও নিলেন তিনি। আর তাঁর হাত ধরেই একসাথে ভাইফোঁটার বিশেষ লাঞ্চ সারলো ভাই-বোনেরা। আর তাতে শামিল হলেন ওই শাসক দলের নেতাও। লুচি, আলু পোস্ত, পনির, পাঁচমেশালি সবজি, ডাল, চাটনি, পাঁপড়, মিষ্টি । আক্ষরিক অর্থেই উৎসবের লাঞ্চ। ওই হোমের কর্মকর্তা নবকুমার দাস বলেন, ” সত্যিই ভাইফোঁটা দিনটা একেবারেই অন্যরকম ভাবে কাটলো। আবাসিকরা ভীষণ খুশি।”
এই মনিপুরে এক ছাদের তলায় রয়েছে তিনটি হোম। বয়েজ, গার্লস ছাড়াও চাইল্ড নিড অফ কেয়ার এন্ড প্রটেকশন। সেখানকার আবাসিকরাও একইভাবে ভাইফোঁটার আনন্দে মেতে ওঠেন। এই হোমে থাকা আবাসিকরা কেউ পথ থেকে উদ্ধার হওয়া। কেউ মা-বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে পালিয়ে এসেছে । কেউ বা ১৮ বছরের আগে বিয়ে করতে গিয়ে আইনের ফাঁসে আটকে গিয়েছে। সকাল থেকেই তারা এক অন্য আবহে ভাইফোঁটার দিন উদযাপন করল। আর এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই যেন ভাই বোনের বন্ধন আরও দৃঢ় হল।
অন্যদিকে পুরুলিয়া শহরে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ১৯৯২ সাল থেকে ভাইফোঁটা পালন করে আসছে। যা হয়ে থাকে মানভূম স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের বারান্দায়। বিভিন্ন দোকানে কাজ করা ভাইদেরকে ফোঁটা দেন বোনেরা। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা অষ্টমী রানা, ইশা দত্ত
ফোঁটা দিলেন ওই প্রান্তিক ভাইদের।
Post Comment