insta logo
Loading ...
×

চালের গুঁড়ির আলপনায় সেজে উঠবে বাড়ির উঠোন, জমে উঠেছে ‘বাঁদনা’-র দ্বিতীয় দিন

চালের গুঁড়ির আলপনায় সেজে উঠবে বাড়ির উঠোন, জমে উঠেছে ‘বাঁদনা’-র দ্বিতীয় দিন

দেবীলাল মাহাত, আড়শা :

‘বাঁদনা’-র দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই মাতোয়ারা পুরুলিয়া। দীপাবলির অমাবস্যার রাত থেকে জঙ্গলমহল পুরুলিয়া , বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম সহ সাবেক মানভূমে শুরু হয়েছে ‘বাঁদনা’ পরব। মূলত গো-বন্দনা হিসাবেই এই উৎসব বেশি পরিচিত। আজ শুক্রবার উৎসবের দ্বিতীয় দিন। এই উৎসব কোথাও ৩ দিন, আবার কোথাও ৫ দিন চলে।

অমাবস্যার রাতে গরু- গাভীদের জাগিয়ে রাখার পর আজ ‘প্রতিপদ তিথি’-তে হয় গোয়াল বা গরয়া পুজা। এদিন গরু,গাভিদের বন্দনা করার পাশাপাশি হাল, জোয়াল, মই প্রভৃতি কৃষি যন্ত্রপাতি ধুয়ে পরিষ্কার করে তুলসি তলায় রেখে বন্দনা করেন কৃষিজীবী মানুষ। দুপুরে হয় ‘গরয়াপুজা’। বাড়ির উঠোনে দেওয়া হয় আলপনা। যাকে বলা হয় ‘চোক্ পুরা’ । পুজার জন্য গোয়াল ঘরে শালুক পাতার ওপরে রাখা হয়, মাটির তৈরী ‘গিরি গোবর্ধন’। নৈবেদ্য হিসাবে রাখা হয় আতপ চাল,গুড়,মধু, ঘিয়ের তৈরি ‘পিঠা’। ‘গরয়া গুসাই’-র জন্য বলি দেওয়া হয় লাল মোরগ। বিকালবেলা বাড়ির মহিলারা নতুন বস্ত্র পরে ‘শিরি গাই’ , ‘শিরি বলদ’-কে বরন (গরু চুমান)করেন। নানা রঙ দিয়ে গরুর গায়ে ছাপ দিয়ে সাজানো হয়। মাথার শিঙে দেওয়া হয় তেল ও সিঁদুর।তারপর জমি থেকে আনা ধানের শিষ দিয়ে তৈরি গয়না মাথায় পরিয়ে দেন। যাকে বলা হয় ‘মোড়’। মহিলারা গো-সম্পদ বৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করে। গরু, গাভীদের সাদরে বরন/বন্দনা করা হয় বলেই এই উৎসবের নাম’ ‘বাঁদনা’। কৃষিজীবী মানুষ বিশ্বাস করেন, গৃহস্থের শ্রীবৃদ্ধির জন্য এরাও সারা বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন। কৃষিকাজে হয়ে ওঠে সব সময়ের সঙ্গী। প্রানের স্পন্দনের সঙ্গে এক সূতোয় বাঁধা। কৃষি ও গরুকে কেন্দ্র করেই সমৃদ্ধি। সে জাতপাতের উর্ধ্বে উঠে, হয়ে ওঠে দেবত্বের অধিকারী। কাশিপুর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের বাংলার বিভাগের অধ্যাপক ক্ষীরোদ চন্দ্র মাহাত বলেন, “বাঁদনা পরবের প্রধান অনুষ্ঠান ‘গরয়া’ পুজা। তা তিথি নির্ভর। অমাবস্যা না ছাড়লে গরয়া পুজা করা যায় না।”

Post Comment